দায়িত্বে অবহেলা: পরীক্ষকের দায়িত্ব হারাতে পারেন ৫৭ কলেজ শিক্ষক

downloadচলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে চরম অবহেলা ও গাফিলতির জন্য ৩৫ প্রধান পরীক্ষকসহ ৫৭ জন পরীক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে তারা আর পরীক্ষকের দায়িত্ব পাবেন না। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন এসব পরীক্ষকের মধ্যে রয়েছেন নামি-দামি কলেজের শিক্ষকরাও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘এইচএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে প্রধান পরীক্ষকসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া পাওয়া গেছে। কেন অবহেলা ও গাফিলতি হয়েছে তাদের কাছে এর কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাবে সন্তুষ্ট না হলে পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী তারা আর কখনও পরীক্ষক হতে পারবেন না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৫১ জন শিক্ষক ভুলত্রুটি রেখেই উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষ করেন। পরে এসব খাতা পুর্নমূল্যায়ন করা হয় অন্য পরীক্ষক দিয়ে। এতেও অঘটন ঘটে। ছয় জন শিক্ষক পুনর্মূল্যায়নও যথাযথভাবে করতে পারেননি।

এ ঘটনার পর গত ২৩ অক্টোবর এই ৫৭ শিক্ষককে শোকজ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান। শোকজ নোটিশে পাবলিক পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে এ ধরনের অবহেলার কারণে কেন তাদের বিরুদ্ধে বিধিমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চায় শিক্ষা বোর্ড।

রাজধানীর অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে সরকারি বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক ইএসএম মাহমুদা ফারুকী, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সান্তনা রাণী কুণ্ডু, জীববিজ্ঞানের শিক্ষক ড. মাহবুবা আক্তার, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক শামীনা হক।

এছাড়াও ক্যামব্রিয়ান কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক বিভাষ কুমার জয়ধর, সরকারি বিজ্ঞান কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক মো. সোলাইমান, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কলেজের ইংরেজির বিভাগের শিক্ষক ডরিন সুলতানা, ঢাকা কলেজের রসায়নের শিক্ষক বিএম মহিবুর রহমান  এবং সরকারি কবি নজরুল কলেজের জীববিজ্ঞানের শিক্ষক সবিতা রাণী মণ্ডল।

পুনর্মূল্যায়নে যেসব শিক্ষক যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন– ঢাকার টিঅ্যান্ডটি কলেজের প্রভাষক আকলিমা আক্তার, রাজধানী আইডিয়াল কলেজের প্রভাষক মো. নুরুল ইসলাম, হাজি আব্দুল লতিফ ভুইয়া কলেজের প্রভাষক দেবাশীষ সিকদার, ক্যামব্রিয়ান কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সুজিত কুমার সেন ও মির্জা আব্বাস ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সরকার সেলিনা রহমান। এছাড়া, অভিযুক্ত ৫৭ শিক্ষকের মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরাও রয়েছেন।  

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রধান পরীক্ষক ও পরীক্ষকরা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও চরম অবহেলার প্রমাণ দিয়েছেন। অদ্বৈত কুমার জানান, সংখ্যা গণণার ক্ষেত্রেও ভুল করেছেন শিক্ষকরা। এমনকি খাতায় শুধু শুধু সবুজ কালি দিয়ে দাগিয়ে রেখেছেন অনেকে। এবার প্রায় ১২ হাজার পরীক্ষক এইচএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব পান।