রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এই সেই ঘাতক ট্রাক

সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ বাংলা শাখা (বিআইএসসিএস) আয়োজিত বিজয়ের অনুষ্ঠান দেখতে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ফারহান নামের এক ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ১১টায় হাইয়াল মরুজ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রবাসীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, ৩৩১১ জেএক্সএ নম্বরের একটি পিক-আপ ভ্যান অতিরিক্ত গতিতে চলার সময় ফারহানতে ধাক্কা দেয়। গাড়িটির চালক একজন সৌদি নাগরিক।

স্থানীয়রা জানায়, এ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গিয়ে গাড়িটি আটক করে। সেসময় বার বার অ্যাম্বুলেন্সকে ফোন করেও না পেয়ে ফারহানকে একটি গাড়িতে করে ওই এলাকার আল ওরোবা নামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে ওরোবার ডাক্তাররা ফারহানকে বড় হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তাকে রিয়াদের ধীরাব এলাকার কিং ফয়সাল হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফারহানের লাশ কিং ফয়সাল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। 

দুর্ঘটনার পর ফারহান

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ বাংলা শাখার পরিচালনা পর্ষদের প্রশাসনিক সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নয়। স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য ফরম সংগ্রহ করেছিল সে। ১৭ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওযার কথা ছিল তার। বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে মানবিক দিক বিবেচনা করে সকল পর্ষদ কর্মকর্তা এবং অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা ফারহানের চিকিৎসার ব্যাপারে তৎপর হয়েছিলেন।’

সকালের দুর্ঘটনার সময় স্কুলে উপস্থিত ছিলেন ফারহানের ফুপু। তিনি জানিয়েছেন, ফারহানের বয়স আনুমানিক ১৩ বছর। তার বাবা শেখ শিপন রিয়াদে একজন ব্যবসায়ী। এর আগে ঢাকার উত্তরায় থাকতো ফারহান। রিয়াদের বাংলা স্কুলে ক্লাস সেভেনে ভর্তি করে দেওয়ার জন্য দু’মাস আগে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আনা হয়েছিল তাকে।

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিআইএসসিএস-তে বিভিন্ন স্টলের আয়োজনের সঙ্গে প্রবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে উপস্থিত ছিল রিয়াদে অবস্থিত ঢাকা মেডিক্যাল সেন্টার (ডিএমসি)। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাদের একজন ডাক্তার রাস্তায় পরে থাকা ফারহানকে পরীক্ষা করে দেখেন। তিনি জানান, ‘ছেলেটির হার্টবিট তখনো ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছিল।’