গত ১৩ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫৪৬ জন স্যানেটারি ইন্সপেক্টরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা বিভিন্ন ফুড ইন্ডাস্ট্রি ও ঝুঁকিভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করবেন। ঝুঁকিভিত্তিক খাদ্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠাবেন। খাদ্যে ভেজাল পাওয়া গেলে তারা বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে মামলা করবেন এবং আইনজীবীকে মামলা চালিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন। তারা একইসঙ্গে বিভিন্ন ফুড সাপ্লায়ার, ফুড ব্যবসায়ী, ফুড বিল্ডার্স অপারেটরদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সচেতন করবেন। তারা দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যেসব খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি রয়েছে সেগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন। নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ ও বিধিমালা অনুযায়ী তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেনেটারি ইন্সপেক্টররা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেব ৪৯০টি উপজেলায় নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তেঁজগাও উন্নয়ন সার্কেলের একজন এই দায়িত্ব পেয়েছেন। একইসঙ্গে ৫৫টি পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব (ডেজিগনেট) পেয়েছেন। ওই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আমিরুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যেহেতু নিজস্ব কোনও লোকবল নেই, তাই ২০১৩ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনের ৫১ এর ১ ধারা অনুযায়ী সেনেটারি ইন্সপেক্টররা দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন।
নিরাপদ খাদ্য নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন কাজ করছেন দেলোয়ার জাহান। তিনি বলেন, সরকার মাঝে মধ্যে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়; এগুলোকে ভালো উদ্যোগ বলা চলে। খাদ্যে ভেজাল কমাতে এই খাদ্য পরিদর্শকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এটাকে সাধুবাদ জানাই। সরকার জৈব ও কৃষি নীতিমালা করছে, এগুলো খুবই ভালো উদ্যোগ বলে আমি মনে করি। তবে, সরকারকে কাজ করতে হবে অন্য জায়গায়। মূল জায়গাগুলোয় কাজ করতে না পারলে প্রকৃত সাফল্য আসবে না। পরিবেশ, প্রকৃতি, স্বাস্থ্য– এগুলোর মাধ্যমেই আমাদের কৃষকদের বিকল্প পথ বাতলে দিতে হবে। এখন কৃষক খাদ্যে রাসায়নিক সার দিচ্ছে। এগুলো কিভাবে একজন খাদ্য পরিদর্শক বদলাবেন? তারা হয়ত ভেজাল খাদ্য দূর করতে পারবেন কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে খাদ্যে যে বিষক্রিয়া হয় তা তাদের পক্ষে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। আর এটি না হলে আমরা কি আদৌ নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে সক্ষম হবো?