সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবনের দক্ষিণ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বক্তব্য দেন।
জয়নুল আবেদীন আরও দাবি করেন,‘প্রধান বিচারপতিকে বিদায় করে অন্যান্য বিচারপতিকে ভয় দেখানোর চেষ্টাও করেছে সরকার।’
লিখিত বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘অতীতে বহুবার বেআইনি সংশোধনীর বিরুদ্ধে অনেক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এই সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এবং আদেশের বিরুদ্ধে কোনও সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে রিভিউ আবেদন করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। একটি রায়ের মধ্যে সরকারের মতে দু’একটি পর্যবেক্ষণ অপ্রাসঙ্গিক থাকতেই পারে। কিন্তু বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের জন্য ৯৪টি যুক্তি দেখালেন। এতে আমাদের মনে হচ্ছে, এই সরকার বিচার বিভাগকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত সুকৌশলে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমেই নিতে চাচ্ছেন। যে কারণে, এই রায়ের পরে তারা বিভিন্ন রকম অহেতুক এবং অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য প্রদান করে রায়টিকে বিতর্কিত করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আজ মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই,মানবাধিকার নেই, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নেই। দেশে অহরহ গুম, খুন চলছে। এ জন্যই সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে যাতে কেউ আদালতের দ্বারস্থ না হতে পারে সেজন্য সরকার বিচার বিভাগের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।’
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘এই রায় থেকে স্পষ্ট যে, এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। সেজন্যই তারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করেন না, গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন না। তাই তারা সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, যে ৭ জন বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন তার মধ্যে ৫ জন এখনও আপিল বিভাগের দায়িত্বে আছেন,তারা তাদের পূর্ববর্তী রায়ের আলোকে এই রিভিউ বিবেচনার আবেদনটি বাতিল করবেন। আমরা দেশের আইনজীবীরা এর প্রতি দৃষ্টি রাখছি এবং ভবিষ্যতে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার জন্য আমরা কঠোর কর্মসূচি দেবো।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে এ সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সমিতির সহসম্পাদক শামীমা সুলতানা দীপ্তি। এসময় সু্প্রিম কোর্টের বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।