আশ্বাস মেলেনি, স্বাস্থ্য সহকারীদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক মঙ্গলবার

চার দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা দেশব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেন, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থেকে তোলা ছবিচার দফা দাবি আদায়ে আশ্বাস না পাওয়ার কারণেই নতুন বছরের প্রথম দিনেই সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। এতে সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রমও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। যদিও ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন বলছেন, আন্দোলনরতদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সহকারীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. এহসানুল করীম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আমাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাদের (স্বাস্থ্য সহকারী) সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।’
এহসানুল করীম আরও বলেন, ‘সারাদেশের সব স্বাস্থ্য সহকারীদের তাদের কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই সময়ের মধ্যে কেউ যদি কাজ বন্ধ রাখে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জামালপুরেও চলেছে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতিএদিকে, বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. এনায়েতুর রাব্বী লিটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা সারাদিন একটানা কর্মবিরতি পালন করেছি। সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চান বলে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) আমাদের সঙ্গে তারা কথা বলবেন।’
কেন সমস্যা হচ্ছে, জানতে চাইলে এনায়েতুর রাব্বী লিটন বলেন, ‘সরকার স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের দিয়ে টিকা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটা সফল হয়নি। এটা তারা পারবেন না। কারণ টিকা দেওয়ার জন্য আমরাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আমরা ছাড়া কারও পক্ষে টিকা দেওয়া সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ২০ বছরেও এই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।’
এদিকে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) লাইন ডিরেক্টর ডা. জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, ‘আজ (সোমবার) আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা ছিল। গড়ে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার থেকে চার হাজার সাতশ সেন্টারে টিকা দেওয়া হয়। শহর এলাকায় স্থানীয় সরকার কাজ করে বলে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আমাদের এই কর্মীরাই টিকা দেয়। আজ হেলথ ইন্সপেক্টর ও পরিবার পরিকল্পনাকর্মীদের দিয়ে টিকা দেওয়া হয়েছে। এটা এডহকভিত্তিতে করা হয়েছে। কিন্তু অন্য স্টাফ দিয়ে একটা কর্মসূচি বেশিদিন চালানো সম্ভব নয়। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।’
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য সহকারীদের চার দফা দাবিগুলো হচ্ছে— বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা, মূল বেতনের ৩০ শতাংশ ঝুঁকিভাতা প্রদান, প্রতি ৬ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে একজন স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ ও ১০ শতাংশ পোষ্য কোটা প্রবর্তন।