সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিতো তারা

র‌্যাবের হাতে আটক তিন প্রতারক তারা তিন জন— কাউসার (২৮), তোফায়েল ইসলাম টিটু (৩৯) ও রেজাউল ইসলাম (৪৯)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদেরকে বিদেশি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেয় তারা। আসলে তারা বাংলাদেশি। ছদ্মবেশে বিভিন্ন মানুষকে উপহার দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাদের মূল কাজ ।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে একজনের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ নিচ্ছিল তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। র‌্যাব-২ এর একটি দল তাদের আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা, একটি বিদেশি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক ফিরোজ কাউসার জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনব পন্থায় বন্ধুত্ব করে, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করতে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেদের বিদেশি নাগরিকের ছদ্মবেশে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে। প্রথমে তারা ধনাঢ্য পরিবারের সদস্য, সন্তান, নারী, পুরুষদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের পর তথ্য-প্রযুক্তি মাধ্যমে তারা প্রতারণা করে।

র‌্যাব কর্মকর্তা ফিরোজ কাউসার জানান, এরকম একটি চক্রের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে ১৫/১ নম্বর ঝিগাতলা মধুবন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের সামনে অবস্থান নেন র‌্যাবের সদস্যরা। সেখানে প্রতারণার অর্থ লেনদেনের সময় কাউসার, টিটু ও রেজাউলকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৯ লাখ ৬৭ হাজার ১০ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি এটিএম কার্ড, আটটি চেকবই, পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছে তারা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের বরাতে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, প্রতারণার জন্য তারা ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতো। প্রথমে টার্গেট  করা ব্যক্তির কাছে নিজেদেরকে আফ্রিকান, আমেরিকান, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড বা ইউরোপের অন্য যে কোনও দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতো। একপর্যায়ে বন্ধুত্ব ও বিশ্বস্ততা অর্জনের পর টার্গেট ব্যক্তিকে জানাতো যে, তার নামে উপঢৌকন হিসেবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি পার্সেল পাঠানো হয়েছে। ওই পার্সেলটি কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হতো। দামি বিদেশি পার্সেল পেতে প্রতারিতরা ব্যক্তিরা ওই চক্রের বাংলাদেশে থাকা সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতো। পরে তারা এসব টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা করে নিতো।