‘দেশে দ্বিতীয় দফায় বুদ্ধিজীবী হত্যার চেষ্টা চলছে’

গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন

লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার মধ্য দিয়ে দেশে দ্বিতীয় দফায় বুদ্ধিজীবী হত্যার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. রোবায়েত ফেরদৌস৷

জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৬ মার্চ) সকালে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন৷

রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘বহুমাত্রিক লেখক ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ​ রায়কে হত্যা করেছে ইসলামি জঙ্গিরা। আমরা তাদের বলতে চাই, হুমায়ুন আজাদ, জাফর ইকবালের হাতে শুধু কলম থাকে৷ তারা কলম দিয়ে সত্য প্রকাশ করেন৷ তারা যে বই লিখেন, তাতে থাকে সত্য বাক্য৷ যদি জঙ্গিদের সে সত্য ভালো না লাগে, তাদের উচিত কিছু লিখে জবাব দেওয়া৷ কিন্তু তারা তা না করে চাপাতি-বুলেট ব্যবহার করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন মানুষের উচ্চতা কতটুকু, স্কেল দিয়ে মাপা যায়৷ একজন মানুষের ওজন পরিমাপেরও যন্ত্র আছে। তবে জাফর ইকবালের মতো মানুষদের ওজন-উচ্চতা কখনও মাপা যায় না৷ এসব মানুষ তাদের সৃজনশীল কর্মের কারণে  মহিমান্বিত৷ জাফর ইকবালকে আক্রমণ করা মানে বাংলাদেশকে আক্রমণ করা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্ম-নিরপেক্ষতাকে আক্রমণ করা।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার৷ তিনি বলেন, ‘জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীর ইন্ধনদাতাকে খুঁজে বের করতে হবে। জাফর ইকবাল শিশু-কিশোরদের জন্য কলম ধরেছেন। তিনি ছাত্রদের অধিকার নিয়ে লিখেছেন। কিন্তু তার ওপর যে অপশক্তি হামলা করেছে, সেই অপশক্তিকে প্রতিহত করার জন্য আমাদের সোচ্চার হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্যসূচিতে যেন কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার মতো কোনও কনটেন্ট না ঢুকে পড়ে, সরকারকে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে, তারা জঙ্গি নির্মূলে সোচ্চার। তারা যদি জঙ্গি দমনে সোচ্চারই হয়ে থাকে, তাহলে জঙ্গিরা বার বার কিভাবে হামলা করছে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন– সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জি এম জিলানী শুভ, ছাত্রলীগ (বিসিএল) সভাপতি সাহজাহান আলী সাজু, ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন মুক্তি, সৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক আকরামুল হক প্রমুখ৷