১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ

সুপ্রিম কোর্টবহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টে একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

এর ফলে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। একইসঙ্গে আগামী রবিবার হাইকোর্টের ওই নির্ধারিত বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে জব্দ করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। সিআইডি পুলিশ দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে। এরপর মামলার বিচারও একসঙ্গে শুরু হয়।

এর আগে ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। পরে একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় বিচারিক আদালতের ৫১৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

দুটি মামলার মধ্যে একটিতে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। বাবর, নিজামী ও পরেশ বড়ুয়া ছাড়া ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন— ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ, উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, এনএসআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নুরুল আমিন, অস্ত্র বহনকারী ট্রলারের মালিক হাজি সোবহান, চোরাকারবারী হাফিজুর রহমান এবং অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ। এদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়া ও নুরুল আমিন পলাতক। এই মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অন্যতম আসামি মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে যুদ্ধাপরাধ মামলায়।

পরে এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।