জঙ্গি আস্তানা থাকা ও ঘিঞ্জি পরিবেশের কারণে বাড়িটি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াদের আগ্রহ কম বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দাবি, ৯ জন জঙ্গি মারা যাওয়ায় অনেকের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। এছাড়া বাড়ির পরিবেশও ভালো নয়।
২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে একটি পরিবার ফ্ল্যাটটিতে বসবাস শুরু করেছে। জঙ্গি আস্তানা, পুলিশের অভিযান ও ৯ জঙ্গি নিহতের বিষয়টা জেনেই তারা ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছে।
সম্প্রতি বাড়িটিতে গিয়ে তার মালিককে পাওয়া যায়নি। পুরো বাড়িটি দেখাশুনা করছেন কেয়ারটেকার জুয়েল হাওলাদার ও তার স্ত্রী সাবরিনা। বাড়ির মালিক হাজী মো. আতাহার উদ্দিন খুব একটা আসেন না। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকেন রাজধানীর জুরাইনে। তবে প্রতিমাসে আতাহার উদ্দিনের মেয়ে জলি কল্যাণপুর এসে বাড়ি ভাড়ার টাকা নিয়ে যান।
সিঁড়ি বেয়ে পঞ্চম তলায় ওঠার পর হাতের বাম পাশে দুটি ফ্ল্যাট। প্রথমটি পেরিয়ে দ্বিতীয়টিতেই পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছিল ৯ জঙ্গি। সেখানে এ বছরের জানুয়ারি থেকে বসবার শুরু করা কুলসুম বেগম কোথায় কোথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, সে স্থানগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এই প্রতিবেদককে দেখান।
দেখা গেছে, ফ্ল্যাটটির স্টিলের দরজাগুলোয় অসংখ্য গুলির চিহ্ন রয়েছে। জানালার কাচেও গুলির ফলে সৃষ্ট ছিদ্র রয়ে গেছে। তবে কক্ষের ভেতরের দেয়ালে কোনও গুলি বা বিষ্ফোরণের তেমন কোনও চিহ্ন নেই। ভাড়াটিয়া ওঠার আগে নতুন করে প্লাস্টার করা হয়েছে।
বর্তমান ভাড়াটিয়া কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমরা জেনেশুনেই উঠেছি। তাই বলে ভাড়া কম নয়। আগের মতোই ভাড়া আছে।’
ভাড়াটিয়া তোলার ক্ষেত্রে তারা খুব সতর্ক আছেন বলে দাবি কেয়ারটেকার জুয়েলের। তার ভাষ্য, এখন কোনও ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হয় না। নতুন ভাড়াটিয়া আসার পর সবার ভোটার আইডিকার্ডসহ সব কাগজ থানায় জমা দিয়ে আসা হয়। যাতে সন্ত্রাসীরা কেউ জায়গা নিতে না পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কল্যাণপুর পাঁচ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির মালিক বলেন, ‘এই বাড়িটা নিয়ে অভিযানের আগে থেকেই এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল। মিরপুর থানা পুলিশ দুই বার বাড়িটিতে রেইড দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনকে আটক করেছিল। কিন্তু মালিকের হুঁশ হয়নি। এখন অবশ্য ঠিক আছে। ব্যাচেলর সম্ভবত নেই। পরিবার ছাড়া কাউকে ভাড়া দিচ্ছেন না।’