মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই রাজীবের মৃত্যু: ফরেনসিক চিকিৎসক

রাজীব হোসেন (ফাইল ছবি)রাজধানীর কাওরান বাজারে দুই বাসের চাপায় আহত রাজীব হোসেনের মাথার হাড় ভাঙা ছিল। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্নের পর এসব তথ্য জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক চিকিৎসক প্রদীপ বিশ্বাস।
রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম জানান, জোহরের নামাজের পর ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে তারা রওনা হবেন গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দিকে। সেখানে পৌঁছার পর আরেকটি জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে মারা যান রাজীব। তার বয়স হয়েছিল ২২ বছর।
যাত্রাবাড়ীর মিরাজিবাগে একটি মেসবাসায় ভাড়া থেকে তিতুমীর কলেজে পড়াশোনা করতেন রাজীব হোসেন। একইসঙ্গে বরিশালের একটি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স করছিলেন তিনি। তার ছোট ভাই মেহেদী হাসান (১৩) ও আব্দুল্লাহ (১১) ঢাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা ও এতিমখানায় পড়ে। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ভাইদের খরচও বহন করতেন রাজীব।
গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে সার্ক ফোয়ারার সামনে দুই বাসের চাপায় রাজীবের শরীর থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ৪ এপ্রিল বিকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ভর্তি হন ঢামেক হাসপাতালে।

এরপর রাজীবের চিকিৎসার জন্য ডা. শামসুজ্জামান শাহীনকে প্রধান করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। বোর্ডের অন্য সদস্যরা ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অসিত চন্দ্র সরকার, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মজিবুর রহমান, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর হোসেন, অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম ও অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম।

গত ৬ এপ্রিল রাজীবের চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, রাজীব এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। কারণ তার ‘হেড ইনজুরি’ আছে। মাথার সামনের অংশ আঘাতপ্রাপ্ত। মাথার হাড়ে ফাটল আছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও উঠে এলো একই তথ্য।