‘রেল ও নৌপথ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে’

দেশে রেলপথ ও নৌপথ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে রেল দুর্ঘটনা ও জাহাজডুবির ঘটনায় দায়ীদের যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তদন্তের কপি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এসময় বক্তারা দ্রুত রেল দুর্ঘটনা ও সুন্দরবনে জাহাজডুবির নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর গোলটেবিল বৈঠকবৃহস্পতিবার রাজধানীর কলাবাগানে ‘রেল দুর্ঘটনা ও সুন্দরবনে জাহাজডুবির কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা থেকে এসব আহ্বান জানানো হয়। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও বারসিক এই সভার আয়োজন করে। রেল দুর্ঘটনা নিয়ে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান এবং সুন্দরবনে জাহাজডুবি বিষয়ে বারসিকের সমন্বয়কারী গবেষক পাভেল পার্থ পৃথকভাবে দু’টি উপস্থাপনপত্র উত্থাপন করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রেল দুর্ঘটনা এবং সুন্দরবনে জাহাজডুবির মূলকারণ কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহিতার অভাব। দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি, সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত এই দুই পরিবহন ব্যবস্থাকে বারবার অকেজো করবার সুদূরপ্রসারী গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’

সভায় রেল দুর্ঘটনা রোধের সুপারিশে বলা হয়, রেললাইন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, রেলওয়ের লোকবল বৃদ্ধি করা, রেলওয়ের লোকোমোটিভ (ডিজেল ইঞ্জিন), যাত্রী কোচ মালবাহী ওয়াগন বৃদ্ধি করা, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে এবং রেলের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নে কারখানাগুলোকে কার্যকর করা, ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা, লেভেল ক্রসিংয়ে গেট বসানো ও প্রহরী নিয়োগ দেওয়া, রিট মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিপূর্বক তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করা।

রেল দুর্ঘটনার চলমান হার কমাতে বা বন্ধ করতে রেল কর্তৃপক্ষকে বিশেষ উদ্যেগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘এসব সুপারিশমালা বাস্তবায়ন না হলে রেলের শত বছরের সুনামই শুধু নষ্ট হবে না বরং রেল ধ্বংস হয়ে যাবে।’ সভা থেকে রেল ও নৌ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ করা এবং সড়ক নির্ভরতা কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

এসময় সুন্দরবনের জাহাজডুবি ও আগুন লাগা রোধে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে সব ধরনের ভারি ও বাণিজ্যিক যান চলাচল নিষিদ্ধসহ সমাজের নানা শ্রেণি, পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় সুন্দরবন সুরক্ষা সেল গঠনের প্রস্তাব জানানো হয়।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করেন- পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, বাংলাদেশ রেলের সাবেক কর্মকর্তা ওমর ফারুক, বারসিকের সমন্বয়কারী সৈয়দ আলী বিশ্বাসসহ প্রমুখ।