ফ্লাইওভারে বাঁশ!

মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভারের শান্তিনগর ঢালে খোলা ক্রস ড্রেন। ঝুঁকি নামছে যানবাহনরাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের শান্তিনগরের দিকে নেমে যাওয়া অংশটি দিয়ে সাঁই সাঁই করে ছুটছে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন। দ্রুতগতিতে নামছে মোটরসাইকেলও। ফ্লাইওভারটির এই অংশ চৌরাস্তার আগে নেমে যেখানে মূল রাস্তার সঙ্গে মিশেছে, এর কয়েক গজ আগেই ফ্লাইওভারটির মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে একখণ্ড বাঁশ! দ্রুতগতিতে ঢালু পথে নামতে থাকা যানবাহনগুলোর চালকরা  হঠাৎ সামনে বাঁশ দেখে ভড়কে যাচ্ছেন। এদিক-সেদিক সরে গিয়ে পার হচ্ছেন জায়গাটি।

মঙ্গলবার (৮ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, ফ্লাইওভারের শান্তিনগরের ওই অংশে পানি নিষ্কাশনের জন্য আড়াআড়ি একটি ছোট ড্রেন রয়েছে; যা ক্রস ড্রেন নামে পরিচিত। ড্রেনটি লোহার তৈরি তিনটি গ্রিল দিয়ে ঢাকা। মাঝের গ্রিলটি উধাও হয়ে গেছে।  

ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে ওইখানে একখণ্ড বাঁশ পুঁতে দিয়েছেন স্থানীয়রা। দুইদিন ধরে এভাবেই চলছে। ফ্লাইওভারটি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফ্লাইওভারটিতে রাতের বেলা বিদ্যুৎ থাকে না।

বাঁশ পুঁতে চিহ্নিত করা হয়েছে জায়গাটিসরেজমিন দেখা গেছে, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার থেকে শান্তিনগর অংশ দিয়ে নামার পথে পানি নিঃসরণের ক্রস ড্রেনের ওপর আড়াআড়িভাবে লোহার তৈরি তিনটি গ্রিল রয়েছে। গ্রিল তিনটির মধ্যে মাঝেরটি উধাও হয়ে গেছে। ফলে অন্তত অর্ধফুট প্রস্থের ক্রস ড্রেনটি উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। বড় পরিবহনগুলো জায়গাটি পার হওয়ার সময় একটি চাকা ক্রস ড্রেনের ওপর দিয়েই যায়। ফলে একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্থানীয় কয়েকজন দোকানি ওই স্থানটিতে একখণ্ড বাঁশ পুঁতে দিয়ে চিহ্নিত করে দিয়েছেন।

ফ্লাইওভারের ক্রস ড্রেনের গ্রিল উধাও। ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে যানবাহনওই ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচলকারী সুপ্রভাত পরিবহনের একজন চালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফ্লাইওভার থেকে খুবই সতর্কতার সঙ্গে নামতে হয়। ওই ড্রেনের ওপর দিয়ে গাড়ির সামনের পেছনের দুটি চাকা না উঠিয়ে পারাপারের কোনও উপায় নেই। গাড়ির চাকা গর্তে বসে যেতে পারে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অপেক্ষাকৃত বড় চাকার যানবাহনগুলোর কোনোভাবে পার হতে পারলেও স্থানটি মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।’ 

এই পথ দিয়েই নিয়মিত চলাচল করেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল হায়াত মোহাম্মদ বাবুল উদ্দিন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতরাতে বাংলামটর অংশ থেকে ফ্লাইওভারে উঠে একটি বড় বাসের পেছন পেছন মৌচাক হয়ে শান্তিনগর নামার সময় হঠাৎ করেই গর্তটি আমার সামনে পড়ে। একা থাকায় মোটরসাইকেল কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তু গর্তটি অতিক্রম করার সময় যে ধাক্কা খেয়েছি তার ব্যথা এখনও সারেনি। সেখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।  তাছাড়া, রাতে ফ্লাইওভারটিতে বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে নামার সময় ঢালের ওই অবস্থা যানবাহনের চালকদের দেখা কষ্টকর।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ইতোমধ্যেই লোক পাঠিয়েছি। আজ রাতের মধ্যেই মেরামত হয়ে যাবে।’