বার কাউন্সিল নির্বাচন বাতিল দাবি আইনজীবী ফোরামের

জাতীয় আইনজীবী ফোরামের সংবাদ সম্মেলনবাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। বৃহস্পতিবার (১৭ মে) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের পক্ষে দলটির মহাসচিব ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন এ দাবি জানান। এর আগে গত ১৪ মে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনি এজেন্ট দেওয়ার বিধান থাকা সত্ত্বেও সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা আইনজীবী সমিতির কোথাও নির্বাচনি এজেন্টদের শিট দেওয়া হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেআইনি। আমরা বার কাউন্সিল নির্বাচনের অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত হওয়া বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন,‘বার কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র,পাসপোর্ট অথবা সংশ্লিষ্ট বারের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোট প্রয়োগের বিধান আছে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল তার নির্দেশে সংশ্লিষ্ট বারের পরিচয় পত্র না দেখিয়ে ভোটারদের ভোট প্রদানের কোনও নির্দেশ দেননি। বেশ কয়েকটি বারে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে কোনও ধরনের পরিচয়পত্র না দেখিয়ে নির্বাচনি কর্মকর্তারা ভোট দানের সুযোগ করে দিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রকৃত আইনজীবীরা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অন্যদিকে যারা আইনজীবী না, তারা ভোট দিয়েছেন।’

ব্যারিস্টার মাহবুব আরও অভিযোগ করে বলেন,‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯ হাজার ৯২ জন। এরমধ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটকেন্দ্রে ভোটার করা হয়েছে মাত্র ৮৫৩ জনকে। শত শত আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে পারেননি। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। তাদের ভোট ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন নিম্ন আদালতের ভোটকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেলকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গত ১০ মে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।’

পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন,‘অবিলম্বে বার কাউন্সিলের নির্বাচনের দুর্নীতি তদন্ত করে দায়ী ও জড়িত ব্যাক্তিদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে নজিরবিহীন এই দুর্নীতির জন্য বার কাউন্সিল নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে সারাদেশের ৭৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে রাতেই আলাদা করে কেন্দ্রগুলোতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সেই তথ্য অনুসারে নির্বাচিত ১৪টি পদের মধ্যে ১২টি পদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা মাত্র ২টি পদে জয়লাভ করে। তবে এই ফলাফল এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেননি নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।