মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু

ঢামেক হাসপাতালে চায়নার মরদেহদুপুরে হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি, তার ওপর বজ্রপাত। দু’বছরের শিশু সন্তান সায়মা ঘরে নেই। আকাশে গর্জন শুনে পাশের বাসা থেকে মেয়েকে আনতে বের হন মা চায়না বেগম। আর তখনই তীব্র শব্দে ছুটে আসা বজ্রাঘাতে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রা চায়নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মঙ্গলবার (১২ জুন) রাজধানীর জুরাইনের বাগানবাড়ি এলাকায় বজ্রাঘাতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তিন সন্তানকে নিয়ে বাগানবাড়ি এলাকায় থাকতেন চায়না বেগম।

চায়নার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্য বড় মেয়ে সুলতানা (১০) স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করে।
সুলতানা জানায়, তার মা এলাকায় রিকশা গ্যারেজে লোকজনের রান্নার কাজ করতেন। মা-ই তাদের দেখাশুনা করতেন। বাবাকে কখনও দেখেনি সুলতানা।

মাকে হারিয়ে বড় মেয়ে সুলতানার কান্না (বাঁয়ে)প্রতিবেশী লাকি বেগম জানান, ছোট মেয়েকে ঘরে আনতে চায়না বাইারে বের হয়েছিল। বজ্রাঘাতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

লাকি বেগম বলেন, ‘চায়নার স্বামীর নাম জসিম। ছোট মেয়েকে গর্ভাবস্থায় রেখে আরেকটি বিয়ে করে অন্য জায়গায় চলে যায় জসিম। চায়না বাসাবাড়িতে কাজ করে সন্তানদের লালন-পালন করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার লোহাগড়া থানার নলদী মিঠাপুর গ্রামে।’ ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া বজ্রাঘাতে চায়নার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

হাসপাতালে মায়ের অস্বাভাবিক এই মৃত্যু শোকে বড় মেয়ে সুলতানা চিৎকার করে বলছিল, ‘মা আমাদের ঈদের জামা কাপড় কিনে দিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আমার বেতন হইলে সবাই গ্রামের বাড়িতে যাইতাম। এখন আমি কী করবো। কীভাবে মাকে নিয়ে যাবো?’