এমন একজন উদ্যোক্তা শারমিন আজাদ লুবনা। ছোটবেলা থেকেই মেহেদির নকশার প্রতি তার শখ ছিল। শুরুর দিকে ফুরসত পেলেই নিজের হাতে নকশা করতেন। এরপর মেহেদির রঙে আঁকার জন্য ধরতেন পরিবারের সদস্যদের হাত।
লুবনা কলেজে পড়ার সময় আশেপাশের অনেকে মেহেদি রাঙা হাতের জন্য আসতেন তার কাছে। শখের বসেই বেইলি রোডের একটি বিপণি বিতানের সামনে চেয়ার-টেবিল বসতে শুরু করেন তিনি। কয়েক বছর ধরে ঈদের আগের তিন দিন সেখানে বসেই মেহেদির রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। হাতে হাতে মেহেদি রঙ দিয়ে ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে খুবই ভালো লাগে তার।
শখ থেকে এখন মেহেদি আঁকা পরিণত হয়েছে লুবনার পেশায়। তিনি কর্মরত আছেন একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানে। অফিসের কাজের ফাঁকে মেহেদির কাজগুলো করেন। খুলেছেন লুবনাজ মেহেদি ওয়েব পেজ।লুবনা বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন, এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় হয় তার।
একইভাবে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেছেন নিভৃতা খান। তার ফেসবুক পেজের নাম ‘ইউনিক অ্যান্ড এক্সোটিক’। তিনি পড়াশোনা করছেন মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন করতে এলেই কাজিনদের নিয়ে মেহেদির কাজ করেন। তার কাছেও এটা ছিল শখ। এখন তা দাঁড়িয়েছে পেশায়। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘মেহেদি আঁকার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে ভালো লাগে।’
নিভৃতাকে সহযোগিতা করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নওশীন অঞ্জন ইতু ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিয়া নিশিথা। তারা জানান, দিনে প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয় তাদের।
ইতু বলেন, ‘ক্লাস সেভেন-এইট থেকেই পরিবারের সদস্যদের হাতে মেহেদি আঁকা দিয়ে শুরু। এরপর প্রতিবেশীরাও আসতো আমাদের কাছে। বন্ধুদের আগ্রহে এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছি। পড়াশোনার ফাঁকে এই কাজে পরিবারের সহযোগিতা ছিল সবসময়। ’
গৃহিণী ফারজানা রহমান কয়েক বছর ধরে চাঁদরাতে ইস্টার্ন প্লাসে গিয়ে হাতে মেহেদির নকশা করে যান। একই স্থানে মেহেদি দিতে আসা পলি সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন, তিনি কখনোই এভাবে মেহেদি দেননি। কিন্তু আজ বন্ধুদের অনুরোধেই হাতে মেহেদি আঁকালেন। তিনি বলেছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে।’
ওদিকে বেইলি রোডে মেহেদি দিতে আসা ভিকারুননিসার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর অর্পি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এই প্রথম তিনি এখানে মেহেদি দিতে এসেছেন। তার কথায়, ‘কেনাকাটার পাশাপাশি ফেরার পথে মেহেদি রাঙা হাত নিয়ে ঘরে ফিরছি। ভালোই লাগছে। এখন একটা ঈদের আমেজ চলে এসেছে চারদিকে।’