‘দাওরায়ে হাদিস’ সম্পর্কিত আইনের খসড়া চূড়ান্ত

কওমি মাদ্রাসার প্রতীকী ছবিকওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর ‘দাওরায়ে হাদিস’কে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বা ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি খসড়াটি চূড়ান্ত করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খসড়া চূড়ান্ত করেছি। এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবো। সেখানে বাছাই কমিটি যাচাই-বাছাই করে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে পাঠাবে। ভেটিং শেষ হলে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে অনুমোদনের জন্য। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে তারপর সংসদে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ১১ এপ্রিল ‘দাওরায়ে হাদিস’ পরীক্ষাকে মাস্টার্স সমমানের মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে কোনও আইন না থাকায় ‘সনদের মান’ দেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে দ্রুত আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

আইনের খসড়া তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্যের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড খসড়া প্রস্তুত করে। গত সপ্তাহে বৈঠক করে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়।

চূড়ান্ত খসড়ার বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রনক মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কওমি ধারার তাদের নিজস্ব মাদ্রসা বোর্ডগুলোর অনুমোদিত পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচির আলোকে যারা ‘দাওরায়ে হাদিস’ পাস করবেন তাদের সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বা ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দেওয়া হবে। আমরা সেই সুপারিশ রেখেছি খসড়ায়।’

বর্তমানে দেশে আলিয়া মাদ্রাসা, কওমি মাদ্রাসা ও স্বতন্ত্র মাদ্রাসা—এ তিন ধারার মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে। আলিয়া মাদ্রাসায় সরকার নিয়ন্ত্রিত বোর্ড রয়েছে এবং এ ধারার দাখিল (এসএসসি সমমান) ও আলিম (এইচএসসি) পাস করে মূল ধারার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে কওমিতে এ সুযোগ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দাওরায়ে হাদিস’কে মাস্টার্স সমমান ঘোষণার পর ছয়টি কওমি শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠন করা হয় ১১ সদস্যের পরীক্ষা আয়োজন কমিটি। আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ নামে এ কমিটির মাধ্যমে গত বছর ১৫ মে প্রথমবারের মতো সমন্বিতভাবে অনুষ্ঠিত হয় দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা। ছয় বোর্ডের সমন্বিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সনদের মান দিতে আইন তৈরি করা হচ্ছে।