নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হবে মেট্রোরেলের যাত্রা





দ্রুত এগিয়ে চলছে মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজ, ছবি- সৈয়দ জাকির হোসেনপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন করার কথা। তবে সরকারের নেওয়া বিশেষ উদ্যোগের কারণে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ মেট্রোরেল উদ্বোধন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ বাস্তবায়নে কাজ করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেল প্রকল্পের উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি উন্মোচন করতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা। এর স্লোগান হলো—‘মুভিং পিপল, সেভিং টাইম অ্যান্ড এনার্জি (চলাফেরা করবে জনগণ, বাঁচবে সময় ও জ্বালানি)।

আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি অংশের কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে। মেট্রো রেলের কাজ সম্পূর্ণ করা গেলে তা হবে যাতায়াতের সবচেয়ে সময়-সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ, আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম। মেট্রোরেল ঢাকাকে আরও সক্রিয়, যোগাযোগবান্ধব ও টেকসই শহরে পরিণত করবে।
ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএএন ছিদ্দিক ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রকল্পটির কাজ সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় বসবাসরতদের জীবনযাপনকে সহজতর করতে এমআরটি লাইন-৬ তৈরি করা হচ্ছে। এটি উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করবে। এর যাত্রাপথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার এবং এ পথে ১৬টি স্টেশন থাকবে।’
এ বছর এপ্রিলের শুরুতে উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রকল্পের সূচনা পয়েন্টে দুটি স্তম্ভের মধ্যে মেট্রোরেলের প্রথম স্প্যানটি স্থাপন করা হয়। শিগগিরই আগারগাঁওয়ে দ্বিতীয় স্প্যানটি স্থাপন করা হবে। ২০.১ কিলোমিটারের এই যাত্রাপথে সর্বমোট ৭৭০টি স্প্যান স্থাপন করা হবে।
সম্প্রতি নির্মাণ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মেট্রোরেলের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রকল্প এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বেষ্টনী ব্যবহার করা হচ্ছে। বাড়তি সুরক্ষা হিসেবে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। রোকেয়া সরনি ও পল্লবীতে নির্মাণ এলাকার পাশ দিয়ে যাত্রী ও পথচারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারেন।
মেট্রোরেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী বছর থেকে জনগণ মেট্রোরেলের সেবা গ্রহণ করতে পারবে। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ পুরো প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে জোরেশোরে কাজ চলছে। মেট্রোরেল চালু হলে ঘণ্টায় প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২১ সাল থেকে প্রতিদিন পাঁচ লাখ মানুষ এমআরটি লাইন-৬-এর সুবিধা ভোগ করবেন।
ডিএমটিসিএল-এর কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-৬-এর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থা রাখা হবে। এ রেলপথ দিয়ে ২৪টি ট্রেন চলাচল করবে। প্রাথমিকভাবে ট্রেনগুলোতে ছয়টি বগি থাকবে। ভবিষ্যতে বগির সংখ্যা বাড়িয়ে আটটি করার পরিকল্পনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এমআরটি লাইন-৬-এর অবস্থান হবে মাটি থেকে ১০.৪ মিটার উঁচুতে। কম্পন ও শব্দদূষণ ঠেকাতে কোথাও কোথাও ফ্লোটিং স্লাব ট্র্যাক (এফএলএস), কন্টিনিউয়াস ওয়েল্ডেড রেলস (সিডব্লিউআর) এবং শব্দ প্রতিরোধী দেয়াল স্থাপন করা হবে।