১৫ আগস্ট-ঈদকে সামনে রেখে নজরদারিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঈদ ও ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব ধরনের জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। এজন্য পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে সাইবার ক্রাইম মনিটরিং ইউনিট গঠন এবং সাইবার পেট্রোল বাড়ানোর জন্যেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদ জামাতের ময়দান ছাড়াও লঞ্চ, ট্রেন, বাস এবং মসজিদে জঙ্গি গোষ্ঠীর নাশকতা রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ শাখার এআইজি মো. সোহেল রানা জানান, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যেসব সামাজিক অনুষ্ঠান ও কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয়, সেসব অনুষ্ঠান যেন নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠওভাবে সম্পন্ন হতে পারে, সেজন্য জেলা পুলিশরদের নজরদারি করার নিদের্শ দেন আইজিপি। কাঙ্গালী ভোজের খাবার সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে কোনও ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকার নির্দেশ দেন আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

আইজিপি আরও বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থামানো যাবে না। নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানীর পশু ওঠানামা রোধ, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাট ইজারাদারকে হাসিল হার প্রদর্শন, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’ পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দেন তিনি। আইজিপি বলেন, ‘পরিবহনের গায়ে উৎসস্থল ও গন্তব্যস্থলের নাম সম্বলিত ব্যানার সংযুক্ত করতে হবে।’

কোরবানির পশুর কৃত্রিম সংকটকারী, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীসহ কোরবানির পশুর হাটের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। চামড়া যাতে সীমান্তমুখী না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যেও নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

জনগণের সার্বিক সহায়তা ও সচেতনতা কামনা করে সভায় আইজিপি বলেন, ‘অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে পানীয় এবং খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন। নৌ পথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নৌ পুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা করা হবে।’

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হবে। জেলা এবং থানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিরোধপূর্ণ স্থানে ঈদ জামাত না করার জন্যেও আহ্বান জানান আইজিপি। ১৫ আগস্টের আগে ও পরে সব হোটেল ও বোডিং তল্লাশির নির্দেশনা দেন তিনি।

সভায় পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মো. মোখলেসুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (এফঅ্যান্ডডি) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, এপিবিএন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি সিদ্দিকুর রহমান, এটিইউ এর অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিজি আবদুস সালাম, সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ ও ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিরা, সংশ্লিষ্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।