রাজধানীতে হঠাৎ বৃষ্টি, বিপাকে কোরবানির হাটের ব্যবসায়ীরা

বৃষ্টির হানারাজধানীতে কোরবানি পশুর হাটগুলোতে হঠাৎ করেই বৃষ্টি হানা দিয়েছে। বৃষ্টির পাশাপাশি বাতাস হওয়ায় বৃষ্টিরোধক অনেক ছাউনি উড়ে গেছে। আবার হাটগুলোর অনেক স্থানে বৃষ্টিরোধক কোনও ব্যবস্থা না থাকায় পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। হাটগুলোতে বৃষ্টির পানি আর পশুর মলমূত্র একসঙ্গে মিশে কাদামাটির সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার সকাল ৫টা থেকে নগরীর হাটগুলোতে এমন চিত্র দেখা দিয়েছে।


নগরীর হাটগুলোতে হঠাৎ করেই বৃষ্টি হানা দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। রবিবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর মেরাদিয়া ও আফতাব নগরের মেরাদিয়া মৌজার হাটে গিয়ে দেখা গেছে বৃষ্টিতে শত শত কোরবানি পশু ভিজছে। ব্যবসায়ীরা পলিথিন দিয়ে বৃষ্টি নিবারণের চেষ্টা করছেন। বাতাসের কারণে অনেক ব্যবসায়ীর সে চেষ্টাতেও লাভ হয়নি।
তাদের অভিযোগ, ইজারা শর্ত অনুযায়ী হাটে ভালো ছাউনির ব্যবস্থা না থাকায় পশুগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে।
সকালে নগরীর হাটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, হাটজুড়ে সারিবদ্ধভাবে কোরবানির পশু বেঁধে রাখা হয়েছে। অনেকের কাছে বৃষ্টি প্রতিরোধক ছাউনি নেই। ফলে বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ আশপাশের বিভিন্ন দোকানে গিয়ে মোটা পলিথিন খুঁজতে থাকেন। আবার অনেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পলিথিন দিয়ে ছাউনি তৈরি করলেও বৃষ্টি আর বাতাসের সঙ্গে তারা পেরে উঠছেন না। ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর পশু বৃষ্টিতে ভিজছে।

রাজধানীর গরুর হাট
মেরাদিয়া হাটের ইজারাদার শাহ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি বাতাসও শুরু হয়েছে। ফলে হাটের কয়েকটি গরু ভিজে গেছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সবখানে ছাউনি তৈরি করে দিতে। তবে যে পরিমাণ গরু, তা হাট ছাড়িয়ে অনেকদূর পর্যন্ত চলে গেছে। সে কারণে সব জায়গায় আমরা ছাউনি দিতে পারিনি। তিনি সিটি করপোরেশন থেকে তাদের কোনও সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন।

হাটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, পশু ব্যবসায়ীদের অনেকেই নিজ ব্যবস্থাপনায় ছাউনি লাগাচ্ছেন। কুষ্টিয়া থেকে ৮টি পশু নিয়ে মেরাদিয়া হাটে আসা পশু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত দুদিন রোদ ছিল। হঠাৎ করেই ভোররাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সব পশু ভিজে যাচ্ছে। আমাদের পশুগুলো খামারে বেড়ে ওঠা। খামারের পশু বৃষ্টিতে ভিজলে ক্ষতি হয়।
আফতাবনগর হাটের ব্যবসায়ী জিয়া উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি হলে ক্রেতা কমে যায়। পশুর ক্ষতি হয়। পলিথিন দিয়ে ছাউনি তৈরি করে রেখেছি। তারপরও ভিজে গেছে। বৃষ্টি যদি আরও বাড়ে তাহলে বিপদ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এই গরু ব্যবসায়ী।
এদিকে হাটের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, হাটে বৃষ্টিরোধকসহ সব ধরনের প্রস্তুতি ইজারাদারকে নিতে হবে। ইজারার শর্তে এটা বলা আছে।
উল্লেখ্য, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি স্থায়ী পশুর হাটসহ এবার কোরবানির পশুর হাট বসেছে ২৫টি। এরমধ্যে দক্ষিণের ১৫টি ও উত্তরের ১০টি হাট রয়েছে। এর একটিতেও বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পশুরক্ষার কোনও সুব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।