‘এত ট্যাহার ছাগল খাওয়ার লোক এই শহরে নাই’


ছাগলের সঙ্গে মো. সবুজ

‘এত ট্যাহার ছাগল খাওয়ার লোক এই শহরে নাই ভাই। আমার একটাই ছাগল, মাইনসে দাম জিজ্ঞেস করে, শুইনে কিছু কয় না, চইলে যায়। কিন্তু ছাগলটা আমি খুব আদরে পাইলে বড় করেছি ভাই।’
ঢাকার খিলক্ষেত বনরূপা কোরবানির পশুর হাটে একটি রাম ছাগল নিয়ে আসা মো. সবুজ কথাগুলো বলছিলেন। পাবনার ভাঙ্গুড়ার এই বিক্রেতা তার ছাগলের দাম চাইছেন এক লাখ ২০ হাজার টাকা।
মো. সবুজ বলেন, ‘এই ছাগলটা ঢাকার হাটে আনার জন্যে ১৫’শ টাকা দিয়ে মাইচ্ছো ট্রেন (কামরা) বুক করেছি। আমি সেই ধরনের লোক। ছাগল আর আমি আসবো বলে ওই বগিতে একটা লোকও তুলবার দিসিলাম না। কিন্তু জোর করে কয়েকজন উঠে পড়েছে। পরে বিমানবন্দর রেল স্টেশনে এসে নাইমে টুক টুক কইরে হেঁটে চইলে আইসেছি এই হাটে।’
নিজের ছাগলের লালন-পালন সম্পর্কে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিন বছর পাইলেছি। সকাল-বিকাল কলা খাওয়ানো লাগছে তাকে, তিন বছরে আমার ৪০ হাজার ট্যাহার কলাই খায়েছে। আর বাকি খাবারের হিসাব আমরা রাখি না। কারণ আমার আরও ছাগল আছে তো, গরুর গোয়ালে থেকে থেকে ভুসিও মেলা খায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই ছাগল অনেক ভদ্র। খুব আদর কইরে পাইলেছি। তোশক পাইতে দিলে পড়ে ঘুমাতি যায়। আর কোল বাশিল দিলে মাইসের (মানুষের) মতো ঘুমায়। আপনি দেখলে মজা পাবেন। পেসাব-পায়খানা বাইরে গিয়ে করবে, নিজের শোয়ার জায়গাতে কোনোদিন করবে না। এত ভদ্র ছাগলটা!’
কত টাকায় বেচতে চান জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘এত বড় দেশাল ছাগল এই বাজারে আর একটাও নেই, খুঁজে পাবেন না। যারা কেনার মানুষ তাদের সঙ্গে দাম করলি পরে কম-বেশি হলে ছেড়ে দিবো। কিন্তু আমার এই খাসিটা ৮০ হাজার ট্যাহার নিচে বিক্রি করলে লস হয়ে যাবে। আমি এর দাম চাচ্ছি এক লাখ ২০ হাজার ট্যাহা।’
ছাগলটি দেখে দাম অনেকেই দাম জিজ্ঞেস করেন। তবে দাম শুনে পিছিয়ে যাচ্ছেন।