কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের জন্য তারা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের কথা জানিয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মেডিক্যাল বোর্ড কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক পরীক্ষা করতে কারাগারে যেতে পারে।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক হারিসুল হক, অর্থপেডিক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী বীরু, চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের কথা আমরাও শুনেছি। তবে কাকে কাকে নিয়ে এ বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তা এখনও জানতে পারিনি।’
এরআগে গত ৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওইদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে, খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী দ্রুত তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে যেন চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
এরপর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক আদালতে (বিশেষ জজ আদালত-৫) খালেদা জিয়ার চাহিদা মোতাবেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ারও আবেদন করেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বিচারের কাজ মুলতবি রাখতেও আদালতে আবেদন জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। বন্দি থাকা অবস্থায় একবার মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। তখন স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ড বলেছিল, খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর নয়। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শারীরিক পরীক্ষা করতে ৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।