মজুরি কমিয়েছে উবার ইটস্, পেশা ঝুঁকিতে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি

উবারের লন্ডন সদর দফতরের সামনে রাইডার পার্টনারদের বিক্ষোভ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন নির্ভর খাবার ডেলিভারি সেবা প্রতিষ্ঠান উবার ইটস্ থেকে অব্যাহতি ও পেশা বদলের চ্যালেঞ্জে পড়েছেন ব্রিটেন প্রবাসী প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশিসহ সেখানকার প্রায় ৫০ হাজার রাইডার পার্টনার। সম্প্রতি উবার ইটস্ কর্তৃপক্ষ চালকদের মজুরির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা।

এ খাতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত প্রবাসী বাংলাদেশি সাইদুল ইসলাম বাংলাত ট্রিবিউনকে বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে উবার ইটস্ তাদের রাইডার পার্টনারদের ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৪০ শতাংশ কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগেরদিন পর্যন্ত রাইডাররা একটা অর্ডার এক মাইলের ভেতর ডেলিভারি দিলে ৪ পাউন্ড ২৬ পেন্স পেতেন। তবে এখন থেকে রাইডারদের দেওয়া হবে ২ পাউন্ড ৬২ পেন্স। এ নিয়ে উবারের ডেলিভারি ড্রাইভারদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সিদ্ধান্ত অপরিবির্তত থাকলে অনেকের পেশাও ছাড়তে হতে পারে।

এদিকে উবার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার থেকে ড্রাইভাররা তাদের মপেডের (বাইক) ইঞ্জিন বন্ধ রেখে উবারের লন্ডন সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে ড্রাইভারদের একত্রিত করার চেষ্টা করছেন তারা।  বৃহস্পতিবারও লন্ডনে উবার রাইডারদের কাজ বর্জন ও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।

উবারের লন্ডন সদর দফতরের সামনে রাইডার পার্টনারদের বিক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডনের বাইরেও। এ খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরের ড্রাইভাররাও বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে স্কটল্যান্ডের ড্রাইভাররা উবার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে কাণ্ডজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।

এদিকে উবার কর্তৃপক্ষ ও ড্রাইভারদের বিবাদে বিপাকে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা। তারা অনলাইনে খাবার অর্ডার দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সেবা পাচ্ছেন না। উবারের কাস্টমার সার্ভিসে ফোন দিলে পর্যাপ্ত সংখ্যক ড্রাইভার নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমাদ আহমদ, কয়সর মিয়াসহ কয়েকজন বাংলাদেশি রাইডার জানান, ‘উবার চাচ্ছে আমাদেরকে আধুনিক চাকর হিসেবে ব্যাবহার করতে। কিন্তু আমরা তা হতে দেবো না। উবার যদি আমাদের পূর্বের ন্যূনতম মজুরি ফিরিয়ে না দেয় বা ন্যূনতম প্রতিটি অর্ডার পাঁচ পাউন্ড না করে,তাহলে আমরা উবার ছেড়ে দেবো।’

তবে উবার ইটস্ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত দুই মাসে ৫০০ চালকের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।