প্রথমেই আলাপের প্রসঙ্গ ছিল কেন ‘মান্টো’। জবাবে পরিচালক নন্দিতা দাস বলেন, সাদাত হোসেন মান্টো ও তার মতো লেখকদের লেখনীর ওপর বার বার আঘাত এসেছে। সমাজের সামাজিক ও আইনি কাঠামোর কারণেও সত্য প্রকাশে লেখকদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমাজের এমন অনুদ্ঘাটিত বা চাপা পড়া বাস্তবতা প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা গণমানুষের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যই হলো ‘মান্টো’।
মান্টোর জীবনী নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে নন্দিতা উপলদ্ধি করেন, এমন অনেক কথাই মান্টো তার সময়ে বলে গেছেন যা আমরা এখন এই একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতায় দাঁড়িয়েও বলতে পারি না। লেখক সাদাত হোসেন মান্টোকে আখ্যা দেওয়া হয় ‘ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোট গল্পকার’ হিসেবে। পাকিস্তানেও এমনটা ভাবা হয়। এর কারণ হিসেবে নন্দিতা বলেন, ‘ওই সমাজের নিদারুণ বাস্তবতার চিত্র মান্টোর মতো করে এত সাবলীলভাবে কেউ কাগজে তুলে আনতে পারেননি।
প্রশ্নোত্তরের বেলায় সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন নন্দিতা। মনোযোগ দিয়ে প্রত্যেকের কথা শোনা, নির্দিষ্ট করে সেসবের উত্তর দেওয়ার ফাঁকেই মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলেন।
চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি আগ্রহী তরুণ প্রজন্মের প্রতি আশাবাদ ফুটে ওঠে তার কণ্ঠে। নন্দিতা মনে করেন, যখন কোনও চলচ্চিত্র পর্দায় প্রদর্শিত হয়, সেই পর্দায় নির্মাতার ‘নিয়্যাত’ বা উদ্দেশ্য ফুটে ওঠে। এই উদ্দেশ্যই ওই চলচ্চিত্রের সঙ্গে দর্শকের যোগসূত্র তৈরি করে দেয়।
ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পে নারীদের অবস্থান, অধিকারের প্রসঙ্গে বলেন, গায়ের রঙ বা সৌন্দর্য নয় প্রত্যেক মানুষের যোগ্যতাই তার অবস্থান নির্ধারণ করে দেয়।
চিন্তা বা বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাধা আসবেই। এমন একটি সমাজেই আমরা বাস করি যেখানে কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করা হবেই। তবুও এর ভেতর থেকেই আমাদের আরও জোরে কণ্ঠ ছাড়তে হবে। আর লিট ফেস্টের আসরে প্রথমবার এসে এ দায়িত্ব পালনের গুরুভার তিনি দিয়ে গেলেন তরুণ প্রজন্মের কাঁধে।