যে গল্পে চিত্রিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের কথা, বাংলাদেশের কথা

একটু বয়স হওয়ার পর থেকেই সপ্তাহে পাঁচটি করে উপন্যাস পড়া যে মানুষের অভ্যাস, ‍উপন্যাসের রাজ্যে তার বিচরণ কোন স্তরে তা সহজেই অনুমেয়। কথা বলছি ব্রিটিশ সাহিত্যিক ফিলিপ হেনশারকে নিয়ে। ইউরোপের এক শহর থেকে অন্য শহরে ছুটি কাটানোর মাঝে একদিন লেখার ঝোঁক পেয়ে বসে ফিলিপকে। সেই যে শুরু, এখনও তা দিব্যি অব্যাহত আছে।

45803830_319090472009548_4078703189996601344_n
ফিলিপ হেনশার বাথ স্পা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়েটিভ রাইটিং বিভাগের অধ্যাপক। সাহিত্যিক পরিচয়েও তিনি সুপরিচিত। ঝুলিতে আছে বেশ ক‘টি সম্মানজনক পুরস্কার। এরমধ্যে ‘কিচেন ভেনম’ সমারসেট মম পদক, আর ‘সিন’স ফ্রম আরলি লাইফ’ জিতেছে ওনদাৎজে পুরস্কার। বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেডও হয়েছেন। তার সবশেষ উপন্যাসটির উপজীব্য হলো ঢাকা ও শেফিল্ডে বাস করা দুটি পরিবারের গল্প, যার নাম ‘দ্য ফ্রেন্ডলি ওয়ানস।’

দ্য ফ্রেন্ডলি ওয়ানস-এর সঙ্গে বাংলাদেশ, ঢাকা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ খুব গভীরভাবে জড়িত। ঢাকা লিট ফেস্টের অষ্টম আসরের দ্বিতীয় দিন (৯ নভেম্বর) বিকালে কবি শামসুর রাহমান সম্মেলন কক্ষে খাদেমুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই উপন্যাসটির ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন ফিলিপ।

সাহিত্য পত্রিকা বেঙ্গল লাইটস-এর সম্পাদক, অনুবাদক, লেখক খাদেমুল ইসলাম। দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সাময়িকীতে নিয়মিত প্রকাশিত হয় তার লেখা। যুক্তরাজ্যের ব্লুমসবারি প্রকাশনা থেকে শিগগিরই প্রকাশ হতে যাচ্ছে তার একটি নন-ফিকশন গ্রন্থ।

শেফিল্ডে একটি ব্রিটিশ পরিবারের পাশের বাড়িতেই থাকেন একটি এশীয় পরিবার। এই দুই পরিবারের পারস্পরিক ঘটনার ধারাক্রমে এগিয়ে যায় উপন্যাসটির ন্যারেটিভ। ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে ১৯৭১ সালের পুরোটা সময় ধানমন্ডিতে কাটানো এক পরিবারের দৃষ্টিতে সাজানো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।

খাদেমুল ইসলামের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ফিলিপ বলেন, ‘এই দুটো পরিবারের সমান্তরাল গল্পের আড়ালে একই সময়ে দুটো একেবারেই ভিন্ন সংস্কৃতির কীভাবে মিথস্ক্রিয়া ঘটে তা স্পষ্ট হয়েছে।’

মজার ছলে খাদেম জানতে চেয়েছিলেন, ‘কীভাবে এত লেখা সম্ভব?’ ফিলিপের উত্তর একেবারেই সোজাসাপ্টা। ‘সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই লিখতে বসে যাও, দেখবে কম করে হলেও ৫০০ শব্দ লিখে ফেলেছ। এবার দু’বছর এই চর্চা অব্যাহত রাখো। ব্যাস!’