মনোনয়নপত্র নিতে যাওয়ার সময় নানক ও সাদেক খানের সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত ২

সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নবোদয় হাউজিং এর সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (১০ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাদেক খানের সমর্থক দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষে সুজন (১৮) নামে এক পথচারী পিকআপের চাপায় আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় আরিফ (২০) নামে আরেকজন যুবক আহত হন। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি  করা হয়। সেখানে দুপুরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আরিফ রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। নিহত সুজন একজন রাজমিস্ত্রী। তিনি নবীনগর হাউজিং এর ১০ নম্বর রোডের বাসিন্দা নুরুল আমিনের ছেলে।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘শনিবার সকালে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাদেক খানের দু’টি গ্রুপ মনোনয়নপত্র নিতে যাচ্ছিলো। পথে মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিং এর সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সমর্থকদের বহনকারী পিকআপের নিচে চাপা পড়ে একজন পথচারী আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।’

নিহতরা এই দুই গ্রুপের কোনও এক গ্রুপের সদস্য কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি যে তিনি (নিহত সুজন) একজন সাধারণ মানুষ। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পিকআপের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তিনি কোনও গ্রুপের সমর্থক কিনা তা জানা যায়নি।’

জানা গেছে, সাদেক খান আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তারা আজকে মনোনয়নপত্র কেনার জন্য যাচ্ছিলেন। একই আসেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকও মনোনয়ন চান।

সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজননিহত সুজনের বন্ধু নুরুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ছয় বন্ধু একসঙ্গে ছিলাম। সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। আজ কোনও কাজ ছিল না। এক বড় ভাই সকালে ডেকেছিল তাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য। সবাই একত্রে পিকআপে উঠি। এসে জানতে পারি সাদেক খানের নমিনেশন কিনতে যাবে তারা।’

সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ের আগে মোহাম্মদীয়া হোমসের লোহারগেটের ভেতরে পিকআপে ছিলাম। তখন এক গ্রুপ ইটপাটকেল মারতে মারতে আসে। আমরা যে যার মতো করে পিকআপ থেকে নামতে থাকি। তখন চালক পিকআপ ঘুরিয়ে লোহার গেট দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পিকআপের নিচে পড়ে সুজন ও আরিফ। সুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।’