‘সৃজনশীলতায় নারী ও পুরুষের বিভেদ নেই’

কবিতায় নারীদের ভূমিকা, নারীদের অবস্থান, নারীদের ভবিষ্যত নিয়ে ঢাকা লিট ফেস্টের পড়ন্ত বিকেলে বাংলা একাডেমির লনে ‘ছয় নারী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচক হিসাবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী; শিক্ষক, লেখক জাহানারা পারভীন, কবি ফরিদা হোসেইন, শিক্ষক ও লেখক আফরোজা সোমা এবং কবি ও সাহিত্যিক শাকিরা পারভীন। আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন কবি জ্যাকি কবির।

SAZZ9950
ফরিদা হোসেইন ‘জীবন মানে আলো আধারের খেলা’ এই কবিতা দিয়ে তার আলোচনা শুরু করেন। নারী কবিদের নিয়ে কথা বলতে গেলে ফরিদা হোসেইন বলেন, ‘স্বর্ণকুমারী, সুফিয়া কামাল কবিতা জগতে আমাদের সবার অভিবাবক। তাদের দেখানো পথেই আমরা কবিতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’ এই কথার প্রেক্ষিতে জাহানারা পারভীন বলেন, ‘সেই সময়ের দিকে গেলে তাদের সংখ্যা খুবই কম। এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু তবুও নারীদের কবিতা রচনার ক্ষেত্রে সেই সেকেলে চিন্তা এখনও চলে আসে। আমি কীভাবে আমার লেখাকে মর্যাদা বা গুরুত্ব দিচ্ছি, সেটা নির্ভর করে আমার নিজের উপর।’
‘সাহিত্যের দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে তাকালে  লিঙ্গের দিকে তাকানো উচিত না’ যুক্ত করেন আফরোজা সোমা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যতোই নিজেদের শুধুমাত্র কবি বা লেখক বা সাহিত্যিক হিসেবে পরিচয় দিতে চেষ্টা করি, কিন্তু কবি বা লেখকের আগে ‘নারী’ শব্দটি যুক্ত হয়। সমকালীন সময়ে আমাদের সামাজিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক বাস্তবতা এই কথা বলতে বাধ্য করে।’
সঞ্চালক জ্যাকি কবির বলেন, ‘রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট  উপেক্ষা করে নারী সাহিত্য নিয়ে কথা বলা যায় না।’
শাকিলা পারভীন বলেন, ‘আমরা যদি কবিতা বা সাহিত্যকে বিচার-ই করতে চাই, তবে সেটা পৃথিবীর ভাষার বিচারে করতে হবে। নারী কবির ক্ষেত্রে শব্দের প্রথমে নারী শব্দ যুক্ত হলেও পুরুষের ক্ষেত্রে কিন্তু এমন দেখা যায় না। এতে বোঝা যায় যে, সেখানে সমঅধিকার বিরাজ করে না। নারী ও পুরুষ এই ভিত্তিতে বিচার না করে লেখক হিসেবে সম্মান দিলে আমাদের সাহিত্য ষোলকলায় পূর্ণতা পাবে।’