তিন বছর ধরে অধরা দুই খুনি

সিসিটিভি ফূটেজ থেকে সংগ্রহ করা দুই খুনির ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মজিবুর রহমানের বাড়ির পঞ্চম তলায় একটি রুম ভাড়া নেয় দুই যুবক। ভাড়া নেওয়ার একদিন পরই মধ্যরাতে বাড়ির দারোয়ানকে বেঁধে মালিক মজিবুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা। এরপর থেকেই পলাতক তারা। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই এ হত্যাকাণ্ডের পর পেরিয়ে গেছে তিনটি বছর। কিন্তু অধরা রয়েছে খুনিরা।

জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে গত তিন বছরেও স্পষ্ট ধারণা পাননি তদন্ত কর্মকর্তারা। কী কারণে একদিন আগে বাড়ি ভাড়া নিয়ে মালিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তার পেছনের কারণ জানা সম্ভব হয়নি। পলাতক দুই খুনিকে পাওয়া গেলে, কী উদ্দেশ্যে মজিবুরকে হত্যা করা হয়েছিল তা উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দীর্ঘ তদন্তের পর এবার মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একে একে ছয় জন তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদল হওয়ার পর বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডি ঢাকা মেট্রোপলিটন দক্ষিণ মতিঝিল ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, এই দুই খুনিকে গ্রেফতার করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। সিসিটিভি ফুটেজে দুই ভাড়াটিয়া যুবকের ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে দুজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল পশ্চিম পাড়ার সোহাগী কমিউনিটি সেন্টারের উত্তর পার্শ্বে মজিবুর রহমান নামে একজনের পাঁচ তলার বাড়িতে দুজন ভাড়াটিয়া ওঠে। ব্যাচেলর হিসেবে একটি রুম ভাড়া নেয় তারা। ভাড়া নেওয়ার এক দিন পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির দারোয়ান মো. রুবেল হোসেনকে পঞ্চম তলার ডেকে নিয়ে তার হাত, পা, মুখ, চোখ বেঁধে রুমের ভেতর আটকে রাখে। এরপর রুমটি বাইরে থেকে লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাত তিনটা থেকে চারটার দিকে বাড়ির মালিক মজিবুর রহমানকে (৫৫) তার নিচতলায় গাড়ির গ্যারেজের পাশে করিডোরে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় ওই দুই ভাড়াটিয়া।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় ১৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে দণ্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর ৪১।

এ ব্যাপারে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা ছিল একটা নির্মম হত্যাকাণ্ড। আমরা এটার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছি। ওদেরকে লোকেট করার জন্য আমরা কাজ করছি। বাড়িটি ছাড়াও নবাবপুর সড়কে নিহতের একটি তার ক্যাবলের দোকানও ছিল।’ 

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, নিহত মজিবুরের স্ত্রী দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন। পারিবারিকভাবে কাউকে সন্দেহ না করা হলেও পুলিশ তাদের সন্দেহের মধ্যে রাখছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।