ভারত হয়ে মালয়েশিয়ায় মানবপাচার, ৫ জনকে দণ্ড




৩৩৩ভারতের ওডিষা থেকে ইন্দোনেশিয়া, এরপর সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের দায়ে রাজধানীর মতিঝিল থেকে গ্রেফতার একটি ট্রাভেল এজেন্সির পাঁচজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ড পাওয়া পাঁচজন হলো সাইমন এয়ার ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. কুদ্দুস ব্যাপারী (৫৫), মো. রবিউল ইসলাম (৩১), মো. জাকির হোসেন (৪১), মো. মিন্টু (৩৯) এবং মো. আরিফুল ইসলাম (২৮)।
র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান বলেন, ‘রবিবার রাতে এই পাঁচজনকে মতিঝিল থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতে তারা দোষ স্বীকার করলে তাদের প্রত্যেককে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।’
র‌্যাব জানায়, গতকাল রবিবার (১১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলের ৯৯, করিম চেম্বার্সের ৫ম তলার সাইমন এয়ার ট্রাভেলসে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সাইমন এয়ার ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. কুদ্দুস ব্যাপারীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিদেশে যাওয়ার বিপুল পরিমাণ জাল কাগজপত্র, ৪৮টি পাসপোর্ট, ৪৫০ ইউএস ডলার, ৪১ হাজার টাকা, সাত লাখ ৮৭ হাজার ৬০০ ইন্দোনেশিয়ান রুপি, ৯৫ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ইন্ডিয়ান রুপি, মালয়েশিয়ার সিম কার্ড, বিএমইটি কার্ডসহ বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যা ব জানায়, তারা সম্প্রতি প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ পথে মানবপাচারের জন্য অভিনব পন্থা ও রুট ব্যবহার করছে। তারা বিদেশে গমনেচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রথমে ঢাকা থেকে বাসযোগে বেনাপোল হয়ে কলকাতায় পাঠায়। কলকাতায় কয়েকদিন অবস্থান করার পরে তাদের ট্রেনে করে ওডিষায় পাঠানো হয়। ওডিষার বিজু পাটনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বিমানযোগে ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ইন্দোনোশিয়ায় ৫৭ দিন অবস্থান করার পর সাগর পথে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশ করানো হয়।
চক্রটি গত আগস্টে ২৫ জনকে এভাবে মালয়শিয়া পাচার করেছে। এদের মধ্যে সাত নারী ও ১৮ জন পুরুষ। পাচার হওয়া এসব নারী-পুরুষ চরমভাবে নির্যাতিত ও নিপীড়িত হচ্ছে বলে তাদের পরিবার জানিয়েছে।
গতকাল রবিবার সাইমন এয়ার ট্রাভেলসের পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর আজ সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম। অবৈধভাবে বিদেশ মানবপাচার ও জাল কাগজপত্র তৈরির দায়ে তাদের প্রত্যেককে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।