অভিবাসনে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য ইইউ’র ৭ লাখ ডলার সহায়তা





১১১১বাংলাদেশে অভিবাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের অধিকার রক্ষায় ইউনিসেফের কার্যক্রমে ৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তাদের এই অর্থ অভিবাসী হওয়া অথবা নিজ দেশের ভেতরে বা দেশের বাইরে জোরপূর্বক স্থানান্তরিত প্রায় ১২ হাজার শিশুকে আগামী তিন বছরে সহায়তা দিতে সরাসরি ভূমিকা রাখবে বলে সোমবার (১০ ডিসেম্বর) ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার যেসব অঞ্চলে ইউনিসেফের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, সেসব অঞ্চলের বেশ কয়েকটিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় অভিবাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি মা-বাবা এবং লালনপালনকারীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শিশুদের সহায়তা দেওয়া হবে। বিশেষ করে যাদের মা-বাবা অথবা লালনপালনকারীরা প্রায়ই আরও ভালো অর্থনৈতিক সুযোগের সন্ধানে অভিবাসী হন। ঝুঁকিতে থাকা অথবা পাচারকারীদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া শিশুসহ অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃসীমান্ত অভিবাসনের শিকার শিশুদের প্রতি লক্ষ্য রেখে বাংলাদেশে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশি শিশু ও নারীদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার জানায়, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হওয়া প্রায় ৫ হাজার জনকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে আসা একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মিয়ানমারের সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢোকে। পালিয়ে আসা এই মানুষগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু, যাদের অনেকেই তাদের বাবা-মার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং পাচারের ঝুঁকিতে আছে। বাংলাদেশেও অভ্যন্তরীণভাবে শিশুদের অভিবাসনের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ৬ লাখ পথশিশু রাস্তায় জীবনযাপন করে, যাদের মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার শিশুর বয়স ৫ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘দারিদ্র্য, শারীরিক অথবা যৌন নিপীড়ন ও সঙ্গীর প্রভাব— এই তিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিশুদের গ্রামাঞ্চল থেকে শহর এলাকায় অভিবাসনের দিকে ঠেলে দেয়। এটি তাদের পাচারের শিকার হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়ায়। এই শিশুরা অপরিহার্য সেবাগুলো থেকে বঞ্চিত। সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত এই শিশুদের অপরিহার্য সেবা নিশ্চিত করতে সর্বদাই অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ।’
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান রেন্সজে তেরিংক বলেন, ‘অভিবাসনের অবস্থা নির্বিশেষে সব শিশুকেই সুরক্ষিত রাখতে হবে। যাতে তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পয়ঃনিষ্কাশন, সামাজিক ও আইনি সেবা এবং মানসিক সমর্থন পায়। আর এটা করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’