বিএসএমএমইউ’তে ব্রেস্ট ক্যানসার রোগীর আত্মহত্যা

বিএসএমএমইউছয় বছর ধরে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত মাদ্রাসা শিক্ষক শাহনাজ বেগম লিলি (৪২) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে হাসপাতালের নিজ বেডে  শরীরে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

বিএসএমএমইউ-এর সহকারী পরিচালক ডা. মো. বেলাল উদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ৯ ডিসেম্বর ব্রেস্ট ক্যানসার নিয়ে শাহনাজ বেগম লিলি হাসপাতালের ক্যানসার ওয়ার্ডের ৫২৭ নম্বর বেডে ভর্তি হন। তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। তার সঙ্গে তার বড় বোন ছিলেন। মঙ্গলবার ভোররাত ৪টা ২০ মিনিটে নিজ বেডে তিনি শরীরে ফল কাটার ছুরি চালান। এসময়  গোঙানির শব্দ পেয়ে তার বোন ও অন্য রোগীরা ছুটে আসেন। পরে চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শাহনাজ বেগম লিলির মৃত্যু হয়েছে।

বিএসএমএমইউ-এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে লিলির আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে গেছে পুলিশ।

শাহবাগ থানার এসআই মশিউর রহমান বলেন, ‘এই রোগী বিএসএমএমইউ-এর ক্যানসার ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। তার কেমোথেরাপি চলছিল।’

বিষয়টি দুঃখজনক উল্লেখ করে ব্রেস্ট ক্যানসার অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের সমন্বয়ক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শুধু এই নারী নয়, ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত অনেক নারীই বিষণ্নতায় ভোগেন। তাই বলে আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়। বিষণ্নতায় আক্রান্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সেলিং দরকার। এই নারী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তাকে হাসপাতাল থেকেও কাউন্সেলিং করা যেত।’

লিলির ভাগিনা হুমায়ুন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খালার দুই ছেলে। তারা কলেজে পড়ে। খালা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।

লিলির বড় বোন সুরাইয়া বেগম। বোনের মৃত্যু নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে ঢামেক মর্গে ছুটে আসেন স্বামী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ২০১৩ সালে এই রোগটি ধরা পড়ে। এরপর ঢামেক এর বার্ন ইউনিটে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর বিভিন্ন হাসপাতালে তার কেমোথেরাপি চলছিল।’

বাংলাদেশ হেলথ রাইটস মুভমেন্টস এর প্রেসিডেন্ট ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর আত্মহত্যার ঘটনা আনইউজ্যুয়াল না। তবে এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। রোগীকে কাউন্সেলিং করা যেত। তার ব্যাপারে আরেকটু  সতর্কতা অবলম্বন করা যেত।’