৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে মিললো যৌনপল্লি থেকে মুক্তি

জরুরি সেবা ৯৯৯রাজধানীর গাবতলীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন সালমা (ছদ্মনাম)। মিরপুর-১ নম্বর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে কারখানায় যাওয়া-আসার পথে রুবেল নামে এক তরুণের সঙ্গে পরিচয়। এক পর্যায়ে বেশি বেতনে অন্য কারখানায় কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখায় রুবেল। পরে এনার্জি ড্রিংকসের নামে অজ্ঞান করার ওষুধ খাইয়ে টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়ায় একটি যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে। তিন মাস পর এক খদ্দেরের মোবাইল থেকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে মুক্তি মিলেছে তার।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ ও টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ। জাতীয় জরুরি সেবার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এসএসপি) মো. মিরাজুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘মঙ্গলবার বেলা ১১ টা ৫৩ মিনিটে আমরা একটি ফোন পাই। টাঙ্গাইল থেকে ফোনদাতা কান্দাপাড়া যৌনপল্লিতে একটি মেয়েকে আটকে রাখার তথ্য জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি জানালে টাঙ্গাইল সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রতীমা রানী ফোর্স নিয়ে যৌনপল্লির একটি বাসা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।’ এ বিষয়ে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তরুণীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা মিরাজুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, “ওই নারী দাবি করেছেন পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে তিন মাস আগে রুবেল ও শাহনাজ বেগম নামে এক নারী তার সঙ্গে কথা বলে। এক পর্যায়ে তাকে এনার্জি ড্রিংকস ‘স্পিড’ পান করতে দেয় রুবেল। তিনদিন পর যখন জ্ঞান ফিরে তখন তিনি নিজেকে দেখতে পান কান্দাপাড়া যৌনপল্লিতে। তাকে যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়েছে।”
তরুণীকে উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা টাঙ্গাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রতীমা রানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যোগাযোগের জন্য আমাকে এক ব্যক্তির ফোন নম্বর দিয়ে ওই নারীকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন থানার ওসি। পরে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।’
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় আনার পর যৌনপল্লির কয়েকজন নারী-পুরুষ একটি স্ট্যাম্প নিয়ে থানায় এসেছে। তারা দাবি করেছে, ওই তরুণী স্বেচ্ছায় সেখানে গেছে। তবে ওই নারী তাদের এই দাবি অস্বীকার করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘ওই নারীকে অপহরণ করে যৌনকর্মে বাধ্য করার প্রমাণ পাওয়া গেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’