ক্যান্সার রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে চিকিৎসকদের আন্তরিকতা

pic-2দেশে ক্যান্সার চিকিৎসক কম থাকায় বিদেশে চিকিৎসা প্রবণতা বাড়ছে রোগীদের। যেসব চিকিৎসক আছেন তারা আন্তরিকভাবে সময় দিলে রোগীদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমবে। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেখানে ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রায় দুই শতাধিক নবীন চিকিৎসক।

ল্যাব এইড হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. এ এফ এম কামালউদ্দিন বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী ক্যান্সারের চিকিৎসা সব দেশে একই। বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের চিকিৎসকরা একই নিয়ম অনুসরণ করেন। তারপরও রোগীদের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। দেশে ফিরে তারা বলে থাকেন, বিদেশে চিকিৎসকরা মনোযোগের সঙ্গে সময় নিয়ে তাদের দেখেছেন। অর্থাৎ চিকিৎসা একই হওয়া সত্ত্বেও আন্তরিকতার কারণে বিদেশের প্রতি রোগীদের আস্থা বেশি। আমাদের দেশের চিকিৎসকরা যদি রোগীদের আন্তরিকভাবে সময় দিয়ে কথা বলেন ও চিকিৎসা করেন, তাহলে তাদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।’

রোগীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে নবীন চিকিৎসকদের পরামর্শ দেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এম হাই। তার কথায়, ‘রোগীদের সঙ্গে যতটা সম্ভব আন্তরিকভাবে কথা বলতে হবে। শুধু টাকার পেছনে ছুটলে চলবে না।’

তবে অধ্যাপক ডা. এম এম হাই উল্লেখ করেন দেশে ক্যান্সার বিষয়ক চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার মন্তব্য, ‘সচেতনতার অভাবে দিন দিন ক্যান্সারের রোগী বাড়ছে। সে তুলনায় ক্যান্সারের চিকিৎসক কম। এ কারণে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হয় চিকিৎসকদের। ক্যান্সার প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন।’

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান হাবিবুল্লাহ তালুকদারের অভিমত, ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘রোগী হয়ে গেলে চিকিৎসা নিতে হবে, কিন্তু সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে ক্যান্সারই হবে না। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই শেষ সময়ে আমাদের কাছে আসেন, যখন আর কিছুই করার থাকে না। তাই ক্যান্সারের লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।’

ক্যান্সার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক। গত তিন বছর ধরে কাজ করছেন তারা। সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধিই তাদের প্রধান লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জহুরা জামিলা খান, ডেলটা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডা. তপেশ কুমার পাল, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের গাইনি অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাহানা পারভীন, অ্যাপোলো হাসপাতালের রেজিস্টার ডা. নারিতা খুরশিদ প্রমুখ।