টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনার সময় নিও জেএমবি’র দুইজন গ্রেফতার

গ্রেফতার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বোমা হামলা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর পরিকল্পনা করার সময় নিও জেএমবির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়াটার ও যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মো. আল আমিন (২৭) ও শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদ (২৭)। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন,  ও বেশ কিছু জিহাদি বই জব্দ করা হয়। শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)  সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে আসা একটি ই-মেইলের সূত্র ধরে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার ও যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিং ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর পরিকল্পনা করতে তারা যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় গোপন বৈঠক করছিল। এ তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটায় যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার এলাকা থেকে মো. আল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় আরও দুইজন পালিয়ে যায়। পরে আল আমিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আল আমিনের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার দক্ষিণগাঁওয়ে। এবং শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার দুর্লভপুর গ্রামে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন জানায়,  ‘Tonmoy Bakshi’ নামক ফেসবুক আইডিটি তার এবং পূর্বে এটি noyon chatterjee নামে সে ব্যবহার করত। এই আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন উস্কানি ও আক্রমণাত্মক লেখা পোস্ট করত।

আল আমিন আরও জানায়, সাইফ ওরফে বাবুলের হাত ধরে সে ২০১৫ সালে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। এরপর জঙ্গি সাইফ ওরফে বাবুলের মাধ্যমে উসামা ওরফে তাসকিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঐসময়ে তাদের মাধ্যমে জঙ্গি আব্দুস সালাম, ফয়জুল্লাহ, মিলাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা সমন্বিতভাবে বিভিন্ন নাশকতা কার্যক্রমের পরিকল্পনা তৈরি করে। তারা মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম, থ্রিমা অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ ও কথা-বার্তা বলতো। তারা টেলিগ্রামে বাংলার মুজাহিদ, সালাউদ্দিনের ঘোড়া, সবুজ পাখি গ্রুপগুলো ব্যবহার করতো। আল আমিনের ভাষ্যমতে, উসামা ওরফে তাসকিন এবং সাইফ ওরফে বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আ. সালাম, ফয়জুল্লাহ, মিলাদের নিয়ে সে নিও জেএমবি’র কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তিনি আরও জানান, আল আমিন আরও স্বীকার করে, সে নিও জেএমবি’র সিলেট এলাকার আঞ্চলিক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছে। পালিয়ে যাওয়া দু’জন ঢাকা অঞ্চলের নেতা, তাদের সঙ্গে সংগঠনের (নিও জেএমবি) কর্ম পরিকল্পনা সংক্রান্ত গোপন বৈঠক করছিল।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।