‘প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাস যেভাবে বরাদ্দ চায় আমরা দেই'

01এই বছর বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস বলেছেন, ‘আমরা শুধু বিএমইটির ডেমোগুলোতে বাজেট দেই, ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। আমরা প্রবাসী কল্যাণে পুরো ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। যেভাবে যে দূতাবাস চায়, আইনজীবী নিয়োগ, আইন সহায়তাকারী সংস্থা নিয়োগসহ যে যেভাবে চেয়েছে আমরা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে দিয়েছি। ’



মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) আয়োজিত ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, বোয়েসেল এবং জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার কৌশলপত্রের খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
গাজী মোহাম্মদ জুলহাস বলেন, ‘দূতাবাসের চাহিদা অনুযায়ী জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে আমরা প্রবাসীদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে পারি। গত তিন বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলবো, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের নামে কোনও অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাইনি।’
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের কল্যাণে চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে গাজী মোহাম্মদ জুলহাস আরও বলেন, ‘৪৭ হাজার মানুষ ঋণ নিয়েছে এই ব্যাংক থেকে। অন্য জায়গা থেকে ৩০ শতাংশ লোন নিতো প্রবাসীরা। গরু বিক্রি করতো, জমি বিক্রি করতো এখন আর তা লাগে না। তিনদিনেই লোন পাওয়া যায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে। ব্যাংকের মূল লক্ষ্য কিন্তু লাভ করা নয়। যা কিছু আছে সেটা আমাদের অভিবাসী কর্মীদের জন্য। পুনর্বাসন নিয়ে আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি মাথা ব্যথা। এটা শুধু আমাদেরই না, অনেক দেশেই চেষ্টা করেছে, পারেনি।’

কর্মশালায় বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা বলেন, ‘রামরুর গবেষণার ফলাফল আমাদের পলিসি তৈরিতে কাজে আসবে। আমরা অন্যান্য দেশ থেকে এক ধাপ এগিয়ে আছি। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আগে বিএমইটির সঙ্গেই ছিল। এখন আইন করে একটি প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। আমাদের যে ওয়েল ফেয়ার ফান্ড করা হয়েছে, সেটা শুধুমাত্র যারা বিদেশ যায় তাদের অবদান। এখানে আর কারও কোনও অবদান নেই। অন্যান্য দেশে দেখলাম সরকার সাহায্য করে, রিক্রুটিং এজেন্সি সাহায্য করে। কাজেই এখানে সরকার কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সি থেকেও নেওয়া যায় কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’
শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এলজি স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম যে তারা যদি আমাদের এখানে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে তাহলে আমরা দুজনই উপকৃত হবো। তারা আমাদের প্রশিক্ষণ সেন্টারগুলো পরিদর্শন করে দেখেছে আমাদের যন্ত্রপাতি অনেক পুরনো। এরপর এলজি নিজস্ব টাকায় আমাদের ওয়ার্কশপ তৈরি করে দিয়েছে কারণ তাদেরও কর্মী প্রয়োজন। আপনারা জেনে খুশি হবেন, প্রথম ব্যাচে ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং তারা এখন এলজিতে কাজ করছে।’
কর্মশালায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ফান্ড কীভাবে বরাদ্দ করা যায় সে বিষয়ে এক গবেষণা নিবন্ধ তুলে ধরেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভারসিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন শিকদার এবং এশিয়ান ইউনিভারসিটি অব উইমেনের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিম রেজা।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরণ কুমার চক্রবর্তী। কর্মশালা সঞ্চালনা করেন রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক সি আর আবরার। এতে অভিবাসন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।