এথেন্সে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনের অনুমোদন

রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন এথেন্সের মেয়রের হাতে শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি তুলে দিচ্ছেনইউরোপীয় সভ্যতা ও গণতন্ত্রের পাদপীঠ গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে বায়ান্নোর ভাষা-শহীদদের স্মরণে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপিত হবে। এথেন্স শহরের প্রাণকেন্দ্র কুমুদ্রু পার্কে এ শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রস্তাবকে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে সে দেশের সরকার। ১৯ ফেব্রুয়ারি এথেন্স মিউনিসিপ্যালিটির এক সভায় এই প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দূতাবাস সূত্র জানায়। সেখানকার প্রবাসীরা মনে করছেন, এর ফলে ভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের কথা এথেন্স তথা ইউরোপবাসী জানতে পারবে এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

এথেন্সে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনের নেতৃত্বে দূতাবাস টিম এথেন্সের মেয়র জর্জিয়াস কামিনিসের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এথেন্সে একটি শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য মেয়রকে প্রস্তাব করেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মেয়রকে শহীদ মিনারের একটি প্রতিকৃতি উপহার দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন। এরপর দূতাবাস থেকে এথেন্সের কুমুদ্রু পার্কে একটি শহীদ মিনার স্থাপনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব সংবলিত একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। অবশেষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারির সভায় এথেন্স মিউনিসিপ্যালিটি দূতাবাসের প্রস্তাব অনুমোদন করে।

এ প্রসঙ্গে গ্রিসে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতা আরিফুর রহমান আরিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইউরোপীয় সভ্যতার পাদপীঠ এথেন্সে শহীদ মিনার স্থাপিত হলে এথেন্সবাসী একদিকে আমাদের গৌরব, শোক ও শক্তির প্রতীক অমর একুশের ইতিহাস আরও বেশি করে জানার সুযোগ পাবে; অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আরও সুবিস্তৃত হবে। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম ছিল।’

তিনি আরও জানান, অমর একুশের প্রাক্কালে এথেন্স শহীদ মিনার স্থাপনের শুভ সংবাদে গ্রিসে বসবাসকারী সর্বস্তরের প্রবাসীদের মধ্যে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। প্রবাসীরা এ উদ্যোগের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, এই শহীদ মিনার এথেন্সের বুকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আত্মপরিচয়ের নিদর্শন হয়ে উঠবে ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।