‘তরুণীকে ধাক্কা দিয়ে পালাতে গিয়ে আবরারকে চাপা’





আবরার আহমেদ চৌধুরীবাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর (২০) মৃত্যুর জন্য গাড়ি চালকের বেপরোয়া গতি ও তাচ্ছিল্য দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। আবরারকে চাপা দেওয়ার আগে এক তরুণীকে বাসটি ধাক্কা দিয়ে পালাচ্ছিল বলে তার অভিযোগ। গুলশান থানায় দায়ের করা মামলাতে তিনি এ অভিযোগ করেছেন।



গুলশান থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাতে আবরারের বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার লিখিত অভিযোগ মামলা (নম্বর ৩০) হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাসচালক সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার ও সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’
আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনোরেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরী এজাহারে অভিযোগ করেন, ‘আমার ছেলে আবরার আহম্মেদ চৌধুরী বাংলাদেশে ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) আইআরএ এর প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। সে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল ৭টায় তার বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার জন্য আমার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বসুন্ধরার বাসা থেকে বের হয়। বসুন্ধরার গেটে গাড়িচালক আমার ছেলেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে যায়। আমার ছেলে আবরার তার বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে ওঠার জন্য বসুন্ধরা গেটের সামনের জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হয়ে পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে যাচ্ছিল। এসময় নর্দান আইকন টাওয়ারের সামনে সুপ্রভাত নামের একটি বাস আমার ছেলেকে চাপা দেয়। যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১১-৪১৩৫। আমার ছেলে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।’
আবারারের বাবার অভিযোগ, ‘আমি ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে পুলিশের একটি গাড়িতে আমার ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমার ছেলের সহপাঠী, বন্ধু ও প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে জানতে পারি বাসটির চালক সিরাজুল ইসলাম বাড্ডার দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে প্রগতি সরণি দিয়ে কুড়িল বিশ্বরোডের দিকে যাচ্ছিল। আমার ছেলেকে এই বাসটি চাপা দেওয়ার আগে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় সিনথিয়া সুলতানা মুক্তা (২০) নামে এক তরুণীকে চাপা দিয়ে পালিয়ে আসে। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই তরুণীকে চাপা দিয়ে পালাতে গিয়ে আমার ছেলের মাথার ওপর বাসটি তুলে দেয়। ঘটনাস্থলেই আমার ছেলের মাথা থেতলে যায়। পুলিশের সহায়তায় আমার ছেলেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল ৮টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আবরারের বাবার অভিযোগ, ‘ঘটনার পরপরই পথচারীরা বাস ও চালক সিরাজুল ইসলামকে আটক করে। আমার ছেলেকে বাসচাপা দেওয়ার ক্ষেত্রে চালক ছাড়াও বাসের হেলপার, কন্ট্রাকটর ও মালিকের ভূমিকা ছিল।’


আরও পড়ুন: সুপ্রভাত ও জাবালে নূরের বাস চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা