‘বিকৃত রাজনীতি গণহত্যার পটভূমি তৈরি করে’

১২

‘বিকৃত রাজনীতি পরিকল্পিতভাবে গণহত্যার পটভূমি তৈরি করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিকৃত রাজনীতির কারণেই গণহত্যা চালানো হয়। স্বাধীনতার পরেও ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো এই গণহত্যা নিয়ে রাজনীতি করেছে। আর এই রাজনীতিতে শামিল হয় স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো।’

রবিবার (২৪ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জেনোসাইড অ্যান্ড ম্যাস ভায়োলেন্স’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ’ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথম দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের সভাপতিত্বে ‘গণহত্যার রাজনীতি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।

‘গণহত্যার রাজনীতি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ‘একাত্তরের গণহত্যা ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চললেও এটাকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো এই অস্বীকৃতির পেছনে কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেখানে ইউরোপের দেশগুলো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে; সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সৌদি আরব ও মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। এই শক্তিগুলো বাংলাদেশের গণহত্যাকে অস্বীকার করে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উচিত গণহত্যার স্মৃতিগুলো সংরক্ষণ কর, সংরক্ষণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের পূর্বসূরীদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানাতে হবে। এটি একইসঙ্গে সমাজ থেকে মৌলবাদ ও উগ্রবাদ দূর করতে সাহায্য করবে।’ 

এসময় উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭১ সালে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত গণহত্যার সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালারাও গণহত্যার শিকার হয়েছিল। এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস ও গণহত্যা সম্পর্কে জানতে পারবে।’

সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে ৬টি সেশনে দেশি-বিদেশি গবেষকরা গণহত্যা বিষয়ক ১৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এর মধ্যে প্রথম দিনে ৩টি সেশনে গণহত্যা বিষয়ক ৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। সম্মেলনে শেষ দিন সোমবার ৩টি সেশনে বাকি ৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ সম্পাদিত ‘জেনোসাইড এন্ড মাস ভায়োলেন্স: পলিটিক্স অফ সিঙ্গুলারিটি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।