ক্ষতিপূরণের অগ্রগতির বিষয়ে শুনানিকালে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে আদালতের আদেশ পালন না করায় বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে পরিবহনটির ব্যবস্থাপককে তলব করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা। অন্যদিকে, গ্রিন লাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ।
শুনানির শুরুতে আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা আদালতকে বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের আদেশের পর গ্রিন লাইন পরিবহনের কেউ কোনও যোগাযোগ করেননি, টাকাও দেননি। তাদের মালিককে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।’
এ সময় গ্রিন লাইন পরিবহনের আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ আদালতকে বলেন, ‘আমি সব সময় তাদেরকে আদালতের আদেশ জানিয়ে এসেছি।’ আদালত বলেন, ‘এর (গ্রিন লাইনের) মালিক কে?’ জবাবে অজি উল্লাহ বলেন, ‘মো. আলাউদ্দিন। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন।’ আদালত জানতে চান, ‘কোথায় আছেন এবং কবে আসবেন?’ জবাবে আইনজীবী অজি উল্লাহ বলেন, ‘আমি জানার চেষ্টা করছি।’
এরপর আদালত বলেন, ‘ব্যবসা তো বন্ধ নেই, ব্যবসা তো চলছে? ম্যানেজারকে ডাকেন। ম্যানেজারের কাছ থেকে পজিটিভ কিছু না পেলে আমরা গ্রিন লাইন পরিবহনের সব বাস সিজ করে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করব। আমরা সব স্টপ করে দেব। একটা সীমা থাকা দরকার। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে হয়ে যাননি।’
পরে আদালত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে গ্রিন লাইনের ব্যবস্থাপককে আদালতে হাজির হতে বলেন। দুপুর ২টার পর এ বিষয়ে পুনরায় শুনানি হবে বলেও আদালত আদেশ দেন।
এরপর গত ৩১ মার্চ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গ্রিন লাইন পরিবহনের করা আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকারচালকের ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পা হারানো রাসেল সরকারের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার জেলার পলাশবাড়িতে। ঢাকার আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় তার বাসা।
এ ঘটনায় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন। পরে আদালত রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন।
আরও পড়ুন:
আদালতের আদেশ না মানায় গ্রিন লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপককে তলব