প্রশ্নপত্রে পর্নো তারকার নাম: শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

নবম শ্রেণির প্রশ্নপত্র

রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের নবম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্রের বহু নির্বাচনি প্রশ্নে পর্নো তারকা সানি লিওন ও মিয়া খালিফার নাম থাকার ঘটনায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শকের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২১ এপ্রিল) জমা দেওয়া প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশ্নপত্র প্রণয়নে প্রধান শিক্ষককে অবশ্যই সমন্বয় করতে হবে, শিক্ষককে সহযোগিতা করারও সুপারিশ করা হয়।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিদর্শক ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশ্নপত্র প্রণয়নে প্রধান শিক্ষককে অবশ্যই সমন্বয় করতে হবে, শিক্ষককে সহযোগিতা করারও সুপারিশ করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নবম শ্রেণির পরীক্ষার ছাপানো প্রশ্নপত্রে দুই পর্নো তারকার নাম থাকায় রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের সহকারী শিক্ষক শংকর চক্রবর্তীকে বাধ্যতামূলক কর্মবিরতিতে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে ওই ঘটনার কারণ দর্শানোসহ পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি।

নবম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্রের বহু নির্বাচনি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়— ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম কী?’ এই প্রশ্নের সম্ভাব্য চারটি উত্তরের মধ্যে একটি ছিল পর্নো তারকা মিয়া খালিফার নাম। আর বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের কিশোর উপন্যাস ‘আম-আঁটির-ভেঁপু’র রচয়িতার সম্ভাব্য নামের উত্তরে রাখা রয়েছে সাবেক পর্নো তারকা সানি লিওনের নাম।

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক প্রীতিশ কুমার সরকার ঘটনার তদন্ত করেন।

প্রীতিশ কুমার সরকার বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকদের কারিকুলাম, প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সংস্থার দ্বারা পরিচালিত, এমপিওভুক্ত নয়।  তাই তাদের শিক্ষকদের দক্ষ করার সুপারিশ করা হয়েছে।’

দুই পর্নো তারকার নাম ব্যবহার ছাড়াও বিশ্বকবির পিতার নামের সম্ভাব্য উত্তরে শফিউল চন্দ্র রাখায় বিস্ময় প্রকাশ করে প্রীতিশ কুমার বলেন, ‘এমন অদ্ভুত সম্ভাব্য উত্তর একজন শিক্ষিত মানুষ কীভাবে রাখতে পারেন।’