বুধবার (১৫ মে) দুপুরে শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, শিশুটিকে একটি কেবিনে পুলিশি পাহারায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে বুধবার সারাদিনেও শিশুটির অভিভাবকদের খুঁজে পায়নি পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘পুলিশের তত্ত্বাবধানে নবজাতকটিকে শিশু হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শিশুটির নিরাপত্তায় কেবিনের সামনে রাখা হয়েছে পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘নবজাতককে প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে শিশু হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। পাশাপাশি ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ শিশুটিকে শিশু হাসপাতালের রেখে গেলো কিনা কিংবা কোনও অসাধুচক্র শিশুটিকে অন্য কোনও জায়গা থেকে চুরি করে কাউকে দেওয়ার জন্য এখানে এনেছে কিনা সে বিষয়েও বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে।’
পুলিশের ধারণা, শিশুটি অন্য কোথাও থেকে এনে এই হাসপাতালে রাখা হয়েছে। কারণ শিশু হাসপাতালে প্রসব বা ডেলিভারি সংক্রান্ত কোনও ইউনিট নেই।
শিশু হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শিশুটি প্রথম থেকেই সুস্থ ছিল। চিকিৎসা দেওয়ার পর সে আরও সুস্থ হয়েছে।
‘মা, আমাকে নিয়ে যাও, তোমায় ছাড়া ঘুম আসে না আমার’
এই শিরোনামে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ফেসবুক পেজে শিশুটিকে তার প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে পুলিশ। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘এই নিষ্পাপ শিশুটিকে শেরেবাংলা নগর থানাধীন শিশু হাসপাতালে পাওয়া গেছে। শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে শিশুটি শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই নিষ্পাপ শিশুটি ফিরে পাক তার মা-বাবাকে। মা-বাবার কোল আলোকিত করে বেড়ে উঠুক আসল পরিচয়ে। মা-বাবার কোল ভরে উঠুক এই নিষ্পাপ শিশুটির কান্না ও হাসিতে।’
যদি কোনও হৃদয়বান ব্যক্তি শিশুটির মা-বাবা ও পরিচিত জনকে চিনে থাকেন বা তাদের সম্পর্কে কোনও তথ্য জেনে থাকেন, নিচে উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো:
ওসি (শেরেবাংলা নগর থানা): ০১৭১৩৩৯৮৩৩৫
এসি (তেজগাঁও জোন): ০১৭১৩৩৭৩১৭৮
পুলিশের এই স্ট্যাটাসের পর শত শত মানুষ দেশ-বিদেশ থেকে এই দুটি নম্বরে ফোন দিয়ে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে পুলিশ সর্বাত্মকভাবে তার প্রকৃত অভিভাবককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুই নারীকে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তাদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
গত ১৪ মে দুপুর ২টার দিকে শিশু হাসপাতালের শৌচাগার থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে শিশুটির বয়স তিন-চার দিন হতে পারে।
আরও পড়ুন: শিশু হাসপাতালের বাথরুম থেকে নবজাতক উদ্ধার