ছোটমনি নিবাস থেকে অভিভাবকের কাছে ফিরবে গহীন

হাসপাতালে পলি বেগমের কোলে গহীন
শিশু হাসপাতালের বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া সেই শিশুটিকে ছোটমনি নিবাসে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে ছোটমনি নিবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেন তাকে উদ্ধার করার পর থেকে বাবা-মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া পলি বেগম ও রাসেল মাহমুদ। তারাই শিশুটির নাম দিয়েছেন গহীন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, এ ধরনের কোনও শিশু উদ্ধারের ঘটনা ঘটলে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে আজিমপুরের ছোটমনি নিবাসে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানকার শিশুদের দত্তক নিতে আগ্রহীদের পারিবারিক আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়। কোনও শিশুর জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়লে আদালত তখন তাদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে একটি দম্পতিকেই নির্বাচন করেন।

শিশুনিবাসে পাঠানোর আগে পলি বেগমের কোলে শিশু গহীন

এরপর শিশুটির গন্তব্য কোথায় হবে সেটিও নির্ধারিত হবে আদালতের মাধ্যমে।

শেষ সময়ে কুড়িয়ে পাওয়া শিশু সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকেন পলি বেগম। শিশু হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল মাহমুদ ও তার স্ত্রী পলি বেগমের ১০ বছরের সংসার জীবনে কোনও সন্তান আসেনি। তারাই এই শিশুটিকে দত্তক নিতে চান বলে জানিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে কোনও শিশুকে হস্তান্তরের নিয়ম না থাকায় গহীনকে শিশুমনি নিবাসে পাঠানো হলো।
শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরিদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, `এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এরপর চিকিৎসা দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। এখন আর আমাদের এখানে রাখার কোনও নিয়ম নেই। বাকিটা আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।'

শিশু হাসপাতালের বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া সেই শিশু গহীন

সদ্যজাত শিশুটিকে আদর-যত্নে সুস্থ করে তোলেন পলি বেগম। আজও তার কোলেই ছিল গহীন। হস্তান্তরের সময় পলি বেগম কান্নাজড়িত উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখলেও আইনে না থাকায় ছোটমনি নিবাসেই পাঠানো হয়েছে শিশুটিকে।

এদিকে, বুধবার (১৫ মে) শিশুটিকে তার প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ফেসবুক পেজে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে পুলিশ। সেখানে লেখা হয়, `এই নিষ্পাপ শিশুটিকে শেরেবাংলা নগর থানাধীন শিশু হাসপাতালে পাওয়া গিয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে শিশুটি শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই নিষ্পাপ শিশুটি ফিরে পাক তার মা-বাবাকে। মা-বাবার কোল আলোকিত করে বেড়ে উঠুক আসল পরিচয়ে। মা-বাবার কোল ভরে উঠুক এই নিষ্পাপ শিশুটির কান্না ও হাসিতে।' ওই স্ট্যাটাসে দুটি যোগাযোগের নম্বরও দেওয়া আছে। এরইমধ্যে অনেকেই শিশুটির অভিভাবক হতে চেয়ে যোগাযোগ করেছেন।