তথ্যফাঁসের অভিযোগে বরখাস্ত দুদক পরিচালক ফজলুল এখন নির্দোষ





আসামির কাছে তথ্যফাঁসের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েও পার পেয়ে গেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক এ কে এম ফজলুল হক। তাকে বরখাস্তের অফিস আদেশে অভিযোগ ছিল সুনির্দিষ্ট। তথ্য ফাঁসের পাশাপাশি অনুসন্ধানে গড়িমসি ও কালক্ষেপণের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। তবু শেষ পর্যন্ত ফজলুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছে তথ্যফাঁসের অভিযোগে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় গত ১০ জুন। প্রশ্ন উঠেছে, ফজলুলের মতো বাছিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও কি মিথ্যা প্রমাণিত হবে?
দুদক পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-২, ময়মনসিংহ বিভাগ) ফজলুলকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় গত ২২ জানুয়ারি। এর কিছুদিন আগেই পদোন্নতি পান তিনি।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও ফজলুল কীভাবে পার পেয়ে গেলেন জানতে চাইলে দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যে অভিযোগে ফজলুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ কারণে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফজলুল পরিচালক হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছেন।’
অথচ ফজলুলকে সাময়িক বরখাস্তের অফিস আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা ২০০৮-এর ২(ঝ) অনুযায়ী ফজলুলের আচরণ অসদাচারণের শামিল এবং একই বিধিমালার ৩৯(ক), (খ) ও (ঙ) বিধি অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিধিমালার ৪৩(১) বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
অফিস আদেশ থেকে জানা যায়, সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু ইউসুফের সম্পদের অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে ফজলুলকে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল। এর ৯ মাস পর গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। পরে গত বছরের ২৬ এপ্রিল সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় উল্লেখ করে ফজলুলকে পুনঃ অনুসন্ধান করতে বলা হয়। এর প্রতিবেদন জমা দেন তিনি ৪ মাস পর, ১৯ আগস্ট। অর্থাৎ ২ দফায় তিনি অনুসন্ধান ও পুনঃ অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দিতে ১৩ মাস দেরি করেন।
আদেশে বলা হয়, ‘অনুসন্ধান ও পুনঃ অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুটি গত ১৪ জানুয়ারি কোর্ট সহকারী এএসআই এনামুল হকের মাধ্যমে আবু ইউসুফের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন ফজলুল। বিষয়টি দুদক মহাপরিচালকের (প্রশাসন) কাছে ধরা পড়ে যায়।’
গত ২২ জানুয়ারী তৎকালীন দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দুদক। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি আছে। যারা অপরাধে যুক্ত হবে তাদের অবশ্যই দায় বহন করতে হবে।’
আর একই দিন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘এই কর্মকর্তা সদ্য পদোন্নতি পেয়েছেন। তারপরও ক্ষমা নেই। যারাই অন্যায় করবেন, বহিষ্কার হবেন।’