ঘরের ভেতরে গাছ লাগানো ও পরিচর্যার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, টবে পানি বা মাটি যাই থাকুক না কেন, মশা সেখানে হানা দেবেই। গাছ রোদ-আলো-বাতাস যেন পায় এবং তিন থেকে সাত দিনের ভেতরে টবের পানি যেন পাল্টে দেওয়া হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি থাকতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, আমাদের আশেপাশে এমন জলাধার বা ডেঙ্গু মশার উপযোগী বদ্ধ পানির উৎস আছে, কিন্তু সবচেয়ে বড় উৎস বাসার মধ্যেই আছে। এই মৌসুমে সেদিকে নজর না দেওয়ায় শিশুদের ওপর ডেঙ্গুর বেশি আক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
‘নগর কৃষি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ইনডোর গাছ সজ্জা ও পরিচর্যার কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা আবু ইউসুফ শিহাব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যদি কোনও গাছের জন্য পানি ব্যবহার করা হয়, তখন এ ধরনের বিপদের আশঙ্কা থাকে। আজকাল ঘরের মধ্যে ছোট অ্যাকুরিয়াম রাখার চল দেখা যায়। সময়মতো পানি বদল করলে সমস্যা হয় না। অনেকদিন ধরে পানি জমে থাকলে, মশা এসে বসে এবং ডিম পাড়ে।’ তিনি বলেন, ‘বারান্দায় গাছ লাগালে যথেষ্ট আলোবাতাস রোদ আছে কিনা, তা নজরে রাখা জরুরি। কোনও কারণে গাছে পানি বেশি দিলে এবং টবের নিচে ফুটো না থাকলে জমে থাকে। গাছের গোড়া কখনোই ভেজা রাখা যাবে না। ’
আপনারা কোনও সচেতনতামূলক উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা প্রশ্নে আবু ইউসুফ শিহাব বলেন, ‘তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া হয়। আমরা ইনডোরে গাছের কাজ করলে সঙ্গে বাড়তি লেমনগ্রাস, গাদা, পুদিনা গাছগুলো লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি। এগুলো মশা তাড়াতে সহায়ক গাছ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে গাছগুলো পানিতে করেন সেগুলোর পানি তিন থেকে সাত দিনের ভেতরে বদল করে দিলে, সেটিকে আর বদ্ধ পানি বলা যাবে না। আর বদ্ধ পানি ছাড়া মশা বা কোনও পোকামাকড় হয় না। যাদের এই পরিচর্যা করার সময় নেই, পানির গাছগুলো তাদের না লাগানোই ভালো।’
শিশু বিশেষজ্ঞ রাকিবুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক শিশু আসে। তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললে দেখা যায়, বাসায় এডিস মশার আস্তানা আছে। গাছপালা যেগুলো আছে সেগুলো পরিচর্যার হয়তো সময় পান না, ফলে বদ্ধ পানিতে জেঁকে বসছে মশা। এতে করে বিপদ আপনার শিশুর। এই মৌসুমে একটু খেয়াল করে যদি মশার উৎসগুলো নির্মূল করা যায়, তাহলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেকটা কমানো সম্ভব।’