বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন খাতে আরও বরাদ্দের দাবি

বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

২০১৯-২০ সালের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ বাড়লেও এটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ এবং ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনে বিরাজমান চ্যালেঞ্জগুলো পূরণে যথেষ্ট নয়। তাই এইসব খাতে আরও বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, পিপিআরসি, ফানসা-বিডি, ডব্লিউএসএসসিসি-বি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে যৌথভাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে আরও ন্যায্য বরাদ্দ প্রয়োজন। ২০১৮-১৯ এর সংশোধিত বাজেট বরাদ্দে উল্লেখযোগ্য চিত্র দেখা যায়, যা ৬৮.৪৯ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৯৫.৭০ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এই ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ১০১.৬১ বিলিয়ন টাকায়। এছাড়া, বিশ্লেষণে ওয়াশ বাজেটের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ ও চর এলাকায় তীব্র চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, নগর ও শহরগুলোতে বরাদ্দের পরিমাণ তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে। মোট ১১টি সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনার চারটি ওয়াসায় বরাদ্দ বাড়ানো হলেও গ্রামীণ এলাকায় বরাদ্দ কমেছে।

অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দীর্ঘমেয়াদে ওয়াশ খাতে ব্যয়ের প্রবণতা ক্রমাগতভাবে কম বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (ডিপিএইচই) এবং পৌরসভায় মানব সম্পদ ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গ্রামাঞ্চল, দুর্গম এলাকায় নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের (ওয়াশ) চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং এসডিজি অভীষ্ট পূরণের জন্য আগামী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ওয়াশ সম্পর্কিত বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে ওয়াশ সেক্টরের বিভিন্ন নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে- ‘কাউকে পেছনে রেখে নয়’, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করতে শহর ও গ্রামীণ এলাকার বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য হ্রাস করাসহ দুর্গম এলাকা যেমন পাহাড়, চর, হাওর এবং উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে ওয়াশ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। মহিলা, শিশু এবং প্রতিবন্ধী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। হতদরিদ্র ও গরীব এ দুই ধরনের জনগোষ্ঠীর কাছে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা পৌঁছে দিতে প্রয়োজনে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা আবশ্যক। সরকারি তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ, ডিপিএইচির এবং পৌরসভাসমূহের মানব সম্পদের যথাযথ উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. খায়রুল ইসলাম, ইউনিসেফের ওয়াশ স্পেশালিস্ট মনিরুল আলম, এসডব্লিউএ দক্ষিণ এশিয়া সিএসও সদস্য মোহাম্মদ জোবায়ের হাসান, ফানসা-বাংলাদেশের ন্যাশনাল কনভেনর ইয়াকুব হোসেন প্রমুখ।