বদলে যাচ্ছে অফিসার্স ক্লাব

1

বদলে যাচ্ছে সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসার্স ক্লাব। সাড়ে ৪ একর জমির ওপর নির্মিত ৫২ বছরের পুরনো এই ক্লাবের বর্তমান অবকাঠামো বদলে দিতে ২২৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। অফিসার্স ক্লাবের নতুন অবকাঠামোয় থাকবে আধুনিক সব সুবিধা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ক্লাবটি ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অফিসার্স ক্লাবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ এর সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানো, বিনোদনের ব্যবস্থার পরিধি বাড়ানো, সদস্যদের মাঝে সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে নতুন এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত ‘অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা-এর ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২২৮ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। সরকারি তহবিল থেকে পুরো টাকা দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ গত এপ্রিলে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২০২১ সালের ৩০ জুন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় গণপূর্ত অধিদফতর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

2

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, ১২ তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হবে, যার ৩টি বেজমেন্ট থাকবে। মাল্টি-লেভেল সুইমিংপুল থাকবে ১টি। মূলভবনের সঙ্গে আরসিসি সংযোগ থাকবে সেতুসহ। থাকবে ভূ-গর্ভস্থ জলাধারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা প্রসারের ক্ষেত্রে অফিসার্স ক্লাবের নতুন ভবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত করা হবে। এর ফলে সাময়িকভাবে যে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, তা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

জানতে চাইলে অফিসার্স ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মেজবাহ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত অফিসার্স ক্লাবের পরিধি না বাড়লেও সদস্য সংখ্যা বেড়েছে কয়েকশ গুণ। মাত্র ২৭ জন সদস্য যাত্রা শুরু করা ক্লাবের বর্তমান সদস্য ৩ হাজার। তাই ক্লাবের অবকাঠামো পরিবর্তন ছিল সময়ের দাবি।

3

তিনি জানান, অফিসার্স ক্লাবের নির্মাণ কাজ পুরোদমে শুরু হলে সাময়িক অসুবিধা হবে বটে। তবে নতুন ভবন হলে সব অসুবিধা কেটে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ দশকের বেশি পুরনো অফিসার্স ক্লাব কালপ্রবাহে প্রজাতন্ত্রের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মিলনস্থল হয়ে উঠেছে। নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে যোগ্য বিবেচিত হলে যেকোনও অফিসার ক্লাবের সদস্য হতে পারেন।

ক্লাবটি পরিচালনা করে একটি নির্বাহী কমিটি। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব নির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি ২ বছর পরপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা নির্বাচিত হন। অফিসার্স ক্লাবের একটি নারী কমিটিও রয়েছে। পদাধিকার বলে এই কমিটির প্রধান হলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের স্ত্রী। এই কমিটি সমাজকল্যাণমূলক কাজ ও সামাজিক অনুষ্ঠান করে। সভা, সম্মেলন, বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ক্লাবের হলঘর, প্যাভিলিয়ন ও অন্যান্য স্থান ভাড়া দেওয়া হয়।