সম্প্রতি নগরজুড়ে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। এতে অর্ধশতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। সিটি করপোরেশন কোনোভাবেই ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। এজন্য প্রতিবেশী দেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় তারা।
এ বিষয়ে বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় ডিএনসিসি’র মেয়র আতিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি কলকাতা পৌর করপোরেশন নানা উদ্যোগ নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। তাদের উদ্যোগ কী, জনবল কেমন, কর্মীদের কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, এ কাজে কী কী ব্যবহার করেছে—এসব বিষয়ে জানতে আমি নিজেই ভারতের হাইকমিশনারকে ফোন করেছি। বিস্তারিত কথা হয়েছে। তিনি আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মশা নিধনে তারা কী কী মডেলের মেশিন ব্যবহার করছে, সেটি জানতে হবে। তারা যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী, সেহেতু তাদের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগিয়ে সফল হতে পারি। কেননা, একইসঙ্গে একই অঞ্চলের মধ্যে বসবাস করেও আমরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, আর তারা মুক্ত—বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে।’
অন্যদিকে দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, তারাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। তারা সব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বসেছেন, তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। প্রয়োজনে কলকাতারও সহযোগিতা চাওয়া হবে। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, একটা সময় ছিল যখন বর্ষা শুরু হলে কলকাতা করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে নামতো। কিন্তু ততদিনে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তো শহরের নানা অঞ্চলে। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতা করপোরেশন সারাবছর ধরেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। শহরের প্রতিটা হাসপাতাল, নার্সিং হোম বা পরীক্ষাগারে রোগীদের কী কী রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে, কী ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে, সেসবের প্রতিদিনের হিসাব রাখা হয়। যাতে ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, সংস্থাটি কয়েক স্তরে সারাবছরেই ডেঙ্গুর বিষয়ে নজরদারি চালায়। প্রথমত, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটাতেই তাদের ২০ থেকে ২৫ জন করে কর্মী আছে। যাদের মধ্যে একটি গ্রুপ প্রচারের কাজ চালিয়ে থাকে, আর অন্য গ্রুপ কোথাও পানি জমছে কিনা, সেটার ওপরে নজর রাখে। এর পাশাপাশি ১৬টি বরো’র প্রত্যেকটির জন্য একটি করে র্যাপিড অ্যাকশন টিম রয়েছে। তাতে সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন লোক থাকে। গাড়িও থাকে তাদের কাছে। কোনও জায়গায় ডেঙ্গুর খবর পাওয়া গেলে দ্রুত তারা সেখানে পৌঁছান এবং এডিস মশার লার্ভা নিধন করেন।