শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পরামর্শ

গোলটেবিল আলোচনাডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার মূল চাবিকাঠি হলো দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার করে দক্ষ ও কর্মমুখী জনশক্তি তৈরি করা। সোমবার (৫ আগস্ট) ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ট্রান্সলেটিং ন্যাশনাল ইয়ুথ পলিসি ইনটু অ্যাকশন প্ল্যান: কাউন্টিং ইয়াং পিপলস পারসপেকটিভ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের সহায়তায় এই গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় জাতীয় যুবনীতি বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং নীতিমালা তৈরি হওয়ার দুই বছর পরও অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ বলেন, ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের সময়সীমাও একই সময়ে। কিন্তু তারপর কী হবে?
একটি গবেষণার বরাত দিয়ে রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আগামী ১০ বছরের মধ্যে পোশাক খাত, চামড়া শিল্পসহ বিভিন্ন সেক্টরে গণহারে কর্মী ছাঁটাই হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দোরগোড়ায় ব্যাপকহারে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি প্রচলনের মাধ্যমে দেশের কর্মসংস্থানের ওপর বড় ধরনের চাপ পড়বে। আমাদের এ নিয়ে কাজ করতে হবে। দেশে ও বিদেশে কর্মীর চাহিদা বজায় রাখার জন্য ভবিষ্যতের শ্রমবাজারের কথা ভাবতে হবে। আমাদের এজন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কর্মী তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশে যে পরিমাণ বিদেশি কাজ করছেন, আমরা কেন তাদের মতো কর্মী তৈরি করতে পারছি না? আমাদের কোথায় সমস্যা সেটা খুঁজে বের করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ্‌ আলী ফরহাদ বলেন, ‘আমলারা কোনও নীতিমালা কিংবা আইনের খসড়া তৈরির সময় খুব কম ক্ষেত্রেই স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ গ্রহণ করে। কিন্তু এর মধ্যেও জাতীয় যুবনীতি খসড়া তৈরি করার সময় আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়েছি। এর মধ্যে সরকারের চেয়ে তরুণদের সম্পৃক্ততা আরও বেশি ছিল বলে আমার মনে হয়েছে।’
যুবনীতি বাস্তবায়নে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, যদিও ২০১৮ সাল পুরাটাই নির্বাচনি বছর ছিল। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এ প্ল্যান তৈরি করতে। যদিও আমরা তৈরি, তারপরও বর্তমানে বিভাগীয় পর্যায়ে সব মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা, স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে অ্যাডভোকেসির কাজ করছি।’
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, সাধারণ মানুষের উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষেই নীতিমালা তৈরি করা হয়। রাষ্ট্রকে অবশ্যই নাগরিকের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং তরুণদের উন্নয়নে বাজেটে আরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে।