ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুলের সাক্ষ্যগ্রহণ

 



আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন।

জেরায় মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুলকে আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আপনি যে ভিডিওটি দেখে মামলাটি করেছেন, ‘মামলাটি করার জন্য কি নুসরাতের পরিবার আপনকে বলেছেন বা অনুমতি নিয়েছেন?’
সায়েদুল বলেন, ‘না বলেনি। আমি স্বেচ্ছায় করেছি।’
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ভিডিওটিতে তৃতীয় এক ব্যক্তির কথা আছে। তিনি কে? আপনি তাকে চেনেন?’
সায়েদুল বলেন, ‘না, আমি চিনি না।’
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম বাদীকে একটি পেনড্রাইভটি দেখিয়ে বলেন, ‘আপনি মামলার আরজির সঙ্গে এই পেনড্রাইভটি দিয়েছেন। এটাই কি দিয়েছেন?’
তখন বাদী সায়েদুল বলেন, ‘জি। এটা আমি দিয়েছি।’
এরপর বাদীর জেরা শেষে বিচারক পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামি ১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

মামলার একমাত্র আসামি মোয়াজ্জেম আদালতে হাজির ছিলেন।
এর আগে গত ১৭ জুলাই বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৩১ জুলাই দিন ধার্য করেন।
গত ১৬ জুন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৭ মে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ১২৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালে। এরপর বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলায় নুসরাতের বক্তব্য গ্রহণের সময় তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে। ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে কৌশলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এর ৫ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।