পরে এ বিষয়ে ওই লিফটম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার নাম জয়। এ লিফট কেবলমাত্র মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরাই ওঠানামা করেন। তবে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এটি ব্যবহার করতে পারেন। এ প্রতিবেদকও পরে সেই লিফটেই যাতায়াত করেছেন।
সে সময় দেখা যায়, লিফটে ওঠার জন্য অপেক্ষমাণ মোসাম্মত রহিমার বাঁ হাতে স্যালাইন লাগানো ছিল। সেটি ধরে আছেন তার ভাই। ডান হাতে ক্যানোলা লাগানো। অত্যন্ত দুর্বল রহিমা লিফটম্যানকে অনেক অনুরোধ করার পরও তাকে বের করে দেন লিফটম্যান। এ সময় অন্য রোগীরা না বের হতে চাইলে তিনি লিফটের লাইট অফ করে দেন। রোগীরা সরে গেলে তিনি পুনরায় লাইট অন করে উপরে চলে যান।
বিষয়টি নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের এ প্রতিবেদক কথা বলেন বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে। তারা বললেন, ‘এটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা। একটি হাসপাতালে একজন রোগীর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেউ না। একহাতে স্যালাইন, আরেক হাতে ক্যানোলা নিয়ে যখন একজন রোগী লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, তাকে ধরে রাখতে হয়– তখন তাকে লিফট থেকে বের করে দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও অমানবিক কাজ!’
জানতে চাইলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, ‘চার নম্বর লিফটি ৭টা থেকে ২টা পর্যন্ত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহার করা হয়।’ হাসপাতালের পক্ষ থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে লিফট থেকে বের করে দেওয়ার কোনও নির্দেশনা আছে কিনা? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনও নিদের্শনা দেওয়া নেই। আপনি বিষয়টি জানালেন, আমি লিফটম্যানকে অবশ্যই কাল জিজ্ঞেস করবো। তাদের বলা আছে, যদি লিফট ফাঁকা থাকে তাহলে রোগী চাইলে অবশ্যই খুলে দিতে হবে। এখন একেকজন একেকভাবে দেখে। একেকজনের আচরণের ধরন একেক রকম হয়। কিন্তু তারপরও ওদেরকে রোগীদের যাতায়াতে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে সে বিষয়ে আমরা তাদেরকে আবার নির্দেশ দেব।’
এ বিষয়ে কথা হয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘লিফটম্যান মানবিকতা বিবর্জিত হলে কিছু করার নেই। সুবিধাবঞ্চিতরা সুবিধা পাবে না এটাই আমাদের এখানকার চিত্র।’