বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণের সুপারিশ

অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনগোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনকে অপসারণের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠিত কমিটি। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় তদন্ত কমিটি তাকে উপাচার্যের পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বাংলা টিবিউনকে বলেন, ‘এই প্রথম দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করা হলো। প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও জমা দেওয়া হয়েছে।’ কী কী অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তিনি কোনও তথ্য জানাননি। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য জানান, সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় উপাচার্যকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি বলে দাবি করতে পারি। যেসব তথ্য উদঘাটন করেছি তাতে একজন ভিসির যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার কথা সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। যেহেতু যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না সেহেতু তিনি ওখানে থেকে কী করবেন।’

প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়াসহ আরও কয়েকটি দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। অন্দোলনের মধ্যে ২১ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের বাইরে বেশ কয়েকটি জায়গায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এদিন বশেমুরবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একই দিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন মো. হুমায়ুন কবির। 

উদ্ভুত পরিস্থিতি সত্যানুন্ধানে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের সদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেনকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মো. কামাল হোসেন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক মৌলি আজাদ। এই কমিটিকে এক মপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। কমিটি পাঁচ দিনের মধ্যেই ইউজিসিতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে বঙ্গবন্ধুর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার সত্য অনুসন্ধানে তথ্য জানাতে চিঠি দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: তদন্ত শেষে ঢাকায় ফিরে গেছে ইউজিসির টিম

                 ভিসিকে লাল কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা